ছবি: সংগৃহীত।
কালো হলুদ অটোটি নিয়ে রোজ মুম্বই কনস্যুলেটের অফিস থেকে কিছুটা দূরে এনে দাঁড় করিয়ে রাখেন চালক। অটোর চাকা এক মিটারও চলে না সারা দিনে। তা সত্ত্বেও মাসে ৬ থেকে ৯ লক্ষ টাকা রোজগার করেন অটোচালক। কোনও স্টার্টআপ সংস্থা বা কর্পোরেট জগতের কর্মীর সমান টাকা উপার্জন করেন এক জন সাধারণ অটোচালক। অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উপার্জনের কাহিনিটি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমের পাতায়। রাহুল রূপানি নামের একটি চশমা প্রস্তুতকারক সংস্থার উচ্চপদস্থ আধিকারিক লিঙ্কডইনে পোস্ট করেছেন মুম্বইয়ের এই অটোচালকের কীর্তি।
প্রতি দিন হাজার হাজার ভিসা আবেদনকারী কনস্যুলেটে আসেন। সেখানকার কড়া নিয়ম হল ভিতরে কোনও ব্যাগ নিয়ে ঢোকা যাবে না। কাছাকাছি কোনও জিনিসপত্র রাখার জায়গা বা লকারের সুবিধাও নেই সেখানে। ফলে আবেদনকারীদের নথিপত্র, ইলেকট্রনিক্স এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এখানেই ভিসার আবেদন ও সাক্ষাৎকার দিতে আসার লোকজনের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এই অটোচালক সুনীত ( নাম পরিবর্তিত)। রূপানি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, গত সপ্তাহে তিনি তাঁর ভিসার জন্য আমেরিকার কনস্যুলেটে যান। নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে জানান যে ব্যাগ ভিতরে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। কনস্যুলেটের নিজস্ব লকারেরও ব্যবস্থা নেই সেখানে।
কী করবেন যখন ভেবে পাচ্ছিলেন না তখনই তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন অটোচালক। ব্যাগটি তাঁর কাছে জমা রাখার পরামর্শ দেন সুনীত। তিনি রূপানিকে বলেন, ‘‘স্যর, আমাকে ব্যাগটি দিন। আমি এটি নিরাপদে রাখব। আমি প্রতি দিন এটাই করি।’’ ব্যাগ জমা রাখার জন্য ১ হাজার টাকা চেয়েছিলেন অটোচালক। রূপানি পোস্টে জানান, অটোচালক প্রতি দিন কনস্যুলেটের বাইরে গাড়ি পার্ক করেন। দৈনিক ২০-৩০ জনকে ব্যাগ রাখার ‘পরিষেবা’ দেন সুনীত। দিনে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয় সুনীতের। সেই হিসাবে মাসে ৬ থেকে ৯ লক্ষ টাকা রোজগার করেন তিনি।