ছবি: প্রতীকী।
স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে প্রায়ই সন্দেহ করতেন। সন্তানকে নিজের ঔরসজাত বলে স্বীকার করতেন না। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ। বিবাদের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, স্ত্রী ভয় পেয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়েন। সেই সুযোগে ২ বছরের সন্তানকে কীটনাশক খাইয়ে ছাদ থেকে ছুড়ে ফেলে দিলেন তরুণ! সঙ্গে সঙ্গে ঘাড় ভেঙে মারা যায় একরত্তি শিশুটি। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার, উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরীর বিছওয়ান থানা এলাকার চিতাউয়া গ্রামে। অভিযুক্ত তরুণের নাম রাজ বাহাদুর। সন্তানকে হত্যা করার অভিযোগে রাজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশুটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
সংবাদ প্রতিবেদন অনুসারে, দুপুরের দিকে অভিযুক্ত রাজ ও তাঁর স্ত্রী যমুনাবতী তর্কে জড়িয়ে পড়েন। রাজ মদের জন্য টাকা না পেয়ে ঝগড়া শুরু করেন। কলহের মধ্যে স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন রাজ। সেই সময় রাজ এতটাই মারমুখী হয়ে উঠেছিলেন যে যমুনাবতী ভয় পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় চলে যান।
সেই অবসরে রাজ ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে ছাদে উঠে যান। যেখানে তাঁর দু’বছরের ছেলে ললিত খেলছিল। রাজ ললিতকে ধরে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করে। এর পর ছেলেকে কীটনাশক পান করতে বাধ্য করেন। এর পর শিশুটিকে ছাদ থেকে তুলে রাস্তায় ফেলে দেন রাজ। মাটিতে আঘাতের ফলে শিশুটির ঘাড় ভেঙে যায়। গ্রামবাসীরা শিশুটিকে দ্রুত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে রাজ একটি ছুরি হাতে নিয়ে ছাদে উঠে যান। কেউ তাঁকে ধরতে এলে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেন। খবর পেয়ে পৌঁছোয় পুলিশ। ৫০ টাকার খৈনির লোভ দেখিয়ে তাঁকে ছাদ থেকে নামিয়ে আনা হয়। তাঁকে আশ্বস্ত করা হয় যে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করবে না। ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যাওয়ার ভান করে পুলিশ। ফাঁদে পা দেন রাজ। দরজা খুলে ছাদ থেকে নামতেই তাঁকে গ্রামবাসীদের সহায়তায় গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্ত এর আগেও স্ত্রীকে কাস্তে দিয়ে আক্রমণ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
রাজের বোন লক্ষ্মী জানান, তাঁর দাদা মদ্যপ। প্রায়ই যমুনাবতীর স্বভাব-চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করতেন। জোর দিয়ে বলতেন যে ললিত তাঁর সন্তান নয়। পরিবারেরই এক সদস্যের সঙ্গে যমুনার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ করতেন রাজ। স্বামীর বিরুদ্ধে সন্তান হত্যার অভিযোগ দায়ের করে বিচার চেয়েছেন যমুনা।