ছবি: প্রতীকী।
প্রাক্তন সঙ্গী বা প্রেমিকার সঙ্গে বনিবনা না হলে বা বিবাদ হলে সমাজমাধ্যমে গোপন মুহূর্তের ছবি ফাঁস করে দেওয়ার ঘটনা প্রায়ই প্রকাশ্যে আসে। সম্প্রতি সংবাদ প্রতিবেদনের তথ্যে উঠে এসেছে এক অদ্ভুত ঘটনা। হাজার হাজার পুরুষ স্বেচ্ছায় তাঁদের স্ত্রী বা প্রেমিকার নগ্ন, গোপন ছবি, ভিডিয়ো পোস্ট করছেন সামাজিক মাধ্যমে। সেই প্রতিবেদন প্রকাশিত হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যম জুড়ে।
ঘটনাটি ইটালির। সে দেশের পুলিশ একটি গোপন ফেসবুক গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে। যেখানে স্বামী-সহ হাজার হাজার পুরুষ সম্মতি ছাড়াই তাঁদের মহিলা সঙ্গীদের অন্তরঙ্গ ছবি আপলোড করেছিলেন। ‘মিয়া মোগলি’ অর্থাৎ ‘আমার স্ত্রী’ নামের এই গ্রুপটি ২০১৯ সাল থেকে সক্রিয় ছিল। ধীরে ধীরে এর সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজারে। দলের সদস্যেরা স্ত্রী, বান্ধবী এমনকি অপরিচিত মহিলাদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিয়ো এখানে শেয়ার করেছেন। সেই ছবি বা ভিডিয়োয় নারীদের নগ্ন অবস্থায় রোদ পোহাতে বা যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত হতে দেখা গিয়েছে। আশ্চর্যজনক ভাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অন্তরঙ্গ ছবি বা ভিডিয়ো তুলেছেন তাঁদের স্বামী বা সঙ্গীরাই। তাঁরাই সেগুলি সমাজমাধ্যমে আপলোড করে দিয়েছেন। এমনটাই উঠে এসেছে পুলিশি তদন্তে। পুলিশ জানিয়েছে, পোস্টগুলিতে প্রায়শই অশ্লীল মন্তব্য এবং পরামর্শ দেওয়া হত।
ইটালির সাইবার অপরাধ ইউনিটের তদন্তকারী বারবারা স্ট্র্যাপাটো জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমের ওই গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার-সহ নানা অপরাধমূলক অভিযোগ যুক্ত হবে তাতে। দু’হাজারের বেশি অভিযোগ পাওয়ার পর মেটা ও পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ২০ অগস্ট গ্রুপটি স্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে পুলিশের ধারণা, গ্রুপের বেনামী পরিচালকেরা এটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। সদস্যদের উদ্দেশে একটি বিদায়ীবার্তায় লেখা হয়েছিল, ‘‘আমরা একটি নতুন ব্যক্তিগত এবং সুরক্ষিত গ্রুপ তৈরি করেছি।’’ প্রশাসকদের সন্দেহ, এই নতুন গ্রুপটি টেলিগ্রামে স্থানান্তরিত হতে পারে। এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে এঁদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। গ্রুপটি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও, হাজার হাজার স্ক্রিনশট এবং ছবি ইতিমধ্যেই অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে। ইটালির আইন অনুসারে সম্মতি ছাড়া যৌনতার ছবি বা ভিডিয়ো শেয়ার করার জন্য ছ’বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।