প্রসূতিকে ফেরাল ২ সুপার স্পেশ্যালিটি 

দুই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিল এক আসন্ন প্রসবাকে। শেষ পর্যন্ত প্রসব হল এক নার্সিংহোমে। ঘটনাস্থল জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র ঝাড়গ্রাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

নার্সিংহোমে মা-মেয়ে। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যন্ত এলাকায় উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতেই জেলায় জেলায় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়েছে তৃণমূল সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই সব হাসপাতালকে তাঁর সরকারের অন্যতম কৃতিত্ব বলেই দাবি করেন।

Advertisement

তেমনই দুই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিল এক আসন্ন প্রসবাকে। শেষ পর্যন্ত প্রসব হল এক নার্সিংহোমে। ঘটনাস্থল জঙ্গলমহলের প্রাণকেন্দ্র ঝাড়গ্রাম।

গোপীবল্লভপুরের ভোলামহুলি গ্রামের বছর বাইশের তনিমারানি দাসের প্রসব বেদনা ওঠে শুক্রবার রাতে। তাঁর স্বামী পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক রঞ্জিত দাস জানান, তনিমাকে রাত ১১টা নাগাদ গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটিতে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসক জানান, সিজার করতে হবে। কিন্তু এখানে হবে না। কারণ, অ্যানাস্থেটিস্ট অনুপস্থিত। তনিমাকে ঝাড়গ্রামে ‘রেফার’ করা হয়। রঞ্জিত বলেন, ‘‘গোপীবল্লভপুর থেকে ঝাড়গ্রামের দূরত্ব ৪৩ কিলোমিটার। মাতৃযানে স্ত্রী নিয়ে যখন পৌঁছই তখন রাত ১টা।’’ দুর্ভোগ বাকি ছিল তখনও। রঞ্জিতের অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটিতে স্বাস্থ্যকর্মীর দেখা মেলেনি। গাড়ি থেকে নামিয়ে তনিমাকে হাঁটিয়েই ভেতরে নিয়ে যেতে হয়। কর্তব্যরত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিমাংশু রায় জানতে চান, গোপীবল্লভপুরে সিজারের পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন এখানে পাঠানো হল? অভিযোগ, সব জেনেও ওই চিকিৎসক বিরক্ত হয়ে জানান, এখানেও প্রসব করানো হবে না। তারপর দু’ঘণ্টা তনিমাকে প্রসূতি কক্ষে ফেলে রাখার পরে জানানো হয় মেদিনীপুরে ‘রেফার’ করা হয়েছে। ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ৩টে ছুঁয়েছে।

Advertisement

মেদিনীপুর নিয়ে যাওয়ার জন্য মাতৃযানে তুলতেই রক্তক্ষরণ শুরু হয় তনিমার। বাধ্য হয়েই ভর্তি করাতে হয় ঝাড়গ্রামের এক নার্সিংহোমে। শনিবার ভোরে মেয়ের জন্ম দেন তনিমা। মা-মেয়ে ভাল আছেন। এই ঘটনায় ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটির সুপার ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন রঞ্জিত।

গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটির সুপার শুভঙ্কর কয়ালের দাবি, ‘‘দু’জন অ্যানাস্থেটিস্টের এক জনের ডিউটি শেষ হয়ে গিয়েছিল। অন্য জন আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ায় রেফার করতে বাধ্য হই।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটির সুপার মলয় আদক তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিমাংশু রায়ের বক্তব্য, ‘‘যা জানানোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝিও উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন