নিরাপত্তা ও নজরদারি আরও আঁটোসাঁটো করতে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ১৩টি থানা এলাকায় বসতে চলেছে প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরা। কমিশনারেট সূত্রে খবর, এর মধ্যে প্রথম দফায় ৪০টি সিসি ক্যামেরা বসছে বরাহনগর, ডানলপ মোড়, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে জংশন ও দক্ষিণেশ্বরে। তার পরে একে একে সোদপুর ও ব্যারাকপুরের বাকি অংশে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচীতে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে হেলমেটহীন ও মাত্রাতিরিক্ত গতিতে বাইক চালানোর দায়ে গ্রেফতারের সংখ্যা হাজারেরও বেশি। ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ প্রচারও যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে শিল্পাঞ্চলে। মোটরবাইক চালানোর অভ্যাসে যে হেলমেট বাধ্যতামূলক, তা বিলক্ষণ টের পাচ্ছেন চালক থেকে আরোহী। বেড়েছে রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ থাকার সময়ও। এ বার সিসি ক্যামেরা বসিয়ে সেই নজরদারিকে আরও কড়া করতে চাইছেন কমিশনারেটের কর্তারা।
গত সপ্তাহেই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী ও মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী সব থানা ও ট্রাফিকের অফিসার এবং পুর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন পথ-নিরাপত্তা নিয়ে। সেখানেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের মতো ব্যস্ত ও ঘিঞ্জি এলাকায় সিসি ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গ ওঠে। শিল্পাঞ্চলের সীমান্ত এলাকাগুলিতে নজরদারি বাড়ানোর বিষয়টিও উঠে আসে সোদপুরের সোনার দোকানের ডাকাতির ঘটনার জেরে। যেহেতু কলকাতা, হাওড়া, হুগলি-সহ আশপাশে যেতে হলে সড়কপথে বি টি রোড দিয়ে ডানলপ পেরোতে হয়, তাই গুরুত্বের নিরিখে প্রথমেই ডানলপের দিকে সিসি ক্যামেরা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার জানান, ট্রাফিক বিভাগ এই ক্যামেরাগুলিতে নজর রাখবে। এতে নাইট ভিশন থাকায় রাতে যাতায়াত করা সব গাড়ির নম্বর প্লেটও বুঝতে পারা যাবে। জানা গিয়েছে, সড়কপথের পরে শিল্পাঞ্চলের ফেরিঘাটগুলিতেও বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। গত বিধানসভা ভোটের সময়ে খড়দহ থানা এলাকার দু’টি ফেরিঘাটে সিসি ক্যামেরা বসেছিল।
আজ, সোমবার ব্যারাকপুর পুলিশ লাইনে পথ-নিরাপত্তা নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে থাকবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ পদস্থ কর্তারা। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়টি ঘোষণা হবে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘এক মাসের মধ্যেই আমরা এই ক্যামেরা চালু করার চেষ্টা করছি। টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি থাকবে এই ব্যবস্থায়।’’
২০১২সালে ব্যারাকপুর কমিশনারেট তৈরির পর থেকেই সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু খরচের কথা ভেবে প্রতি বারই কর্তারা গড়িমসি করেছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে যাতে আপস করা না হয়। তার পরেই ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।