লাটাইয়ের ঘায়ে বন্ধুকে মেরে গ্রেফতার কিশোর

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উস্তির মড়াপাই গ্রামে। প্রণবের বাড়ি মগরাহাটের ধনপোতা গ্রামে। খুনের অভিযোগে প্রণবের বন্ধু বছর চোদ্দোর এক কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উস্তি শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:২০
Share:

প্রণব চক্রবর্তী

ছোট থেকে ঘুড়ির নেশা প্রবল। তা নিয়েই বন্ধুর সঙ্গে গোলমাল। বন্ধুই লাটাইয়ের ঘা বসিয়ে দেয় মাথায়। যার জেরে প্রাণ গিয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র প্রণব চক্রবর্তীর (১২)।

Advertisement

শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উস্তির মড়াপাই গ্রামে। প্রণবের বাড়ি মগরাহাটের ধনপোতা গ্রামে। খুনের অভিযোগে প্রণবের বন্ধু বছর চোদ্দোর এক কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার ডায়মন্ড হারবার আদালতে তাকে তোলা হলে বিচারক হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মড়াপাই হাইস্কুলে পড়ত প্রণব। সময় পেলেই বন্ধুর সঙ্গে ঘুড়ি-লাটাই হাতে চলে যেত গ্রামের হাইস্কুল মাঠে। শনিবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বাড়ি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে স্কুলের মাঠে ‘ঘুড়ি ওড়াতে যাচ্ছি’ বলে বেরোয় সে।

Advertisement

তারপর থেকে আর খোঁজ মিলছ্ল না তার। খুঁজতে খুঁজতে প্রণবের বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছন তাঁরা। ছেলেটি তাদের বলে, কেউ একজন প্রণবকে খুন করে পালিয়েছে।

ঘটনা শুনে মাথায় হাত সকলের। লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করায় এক সময়ে সে খুনের কথা স্বীকার করে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। লাটাই দিয়ে মাথায় মেরে স্কুলের পাশেই একটি ডোবায় প্রণবের দেহ সে ডুবিয়ে রেখেছে বলে জানায়।

খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। তারাই প্রণবের দেহ উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় তার বন্ধুকে।

ছেলেটি পুলিশকে জানিয়েছে, ঘুড়ি ওড়ানোর সময়ে একটা লাটাই পাওয়া যাচ্ছিল না। এই নিয়ে দু’জনের বচসা বাধে। সে সময়ে অন্য একটা লাটাই দিয়ে প্রণবের মাথায় মারে ছেলেটি। রক্তাক্ত অবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায় প্রণব। তার জামা-জুতো খুলে হাত ধরে টেনে প্রায় ১০০ মিটার দূরে টেনে নিয়ে যায় ছেলেটি। তারপরে ডোবায় নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে বন্ধুর মাথা অনেকক্ষণ ধরে জলের তলায় চেপে ধরে রেখেছিল সে। ‘কাজ’ সেরে দেহের উপরে ঘাস, কচুরিপানা ঢাকা দিয়ে চলে যায়।

জেরায় পুলিশকে ছেলেটি আরও বলে, ‘‘চারটে লাটাই চুরি করেছিল ও। সেই রাগেই একা পেয়ে মেরে ফেলেছি।’’

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের দাদা মৃন্ময় চক্রবর্তীর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। এ দিন দুপুরে ধনপোতা গ্রামের মৃতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল প্রতিবেশীদের ভিড়। ঘরের মধ্যে মৃতের মা আলপনাদেবী অঝোরে কাঁদছেন। প্রণবের বাবা বলরামবাবু বলেন, ‘‘তিন ভাই বোনের মধ্যে ছোট প্রণব। তাকে এ ভাবে হারাতে হবে কখনও ভাবিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন