Crime

গঙ্গাসাগর ঘোরানোর টোপ দিয়ে ৪ পুণ্যার্থীকে অপহরণ, গ্রেফতার ৬

অপহৃতদের পরিবারের কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সুন্দরবন  শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪০
Share:

অপহৃত এই চার জনকেই উদ্ধার করেছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

কম টাকায় গঙ্গাসাগর ঘোরানোর টোপ দিয়ে ভিন্ রাজ্যের ৪ পর্যটককে অপহরণ করা হয়েছিল। নির্জন এলাকার একটি বাড়িতে তাঁদের আটকে রেখে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল দুষ্কৃতীরা। তা দিতে না পারলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। কিন্তু সুন্দরবন জেলা পুলিশের তৎপরতায় সেই ছক বানচাল হয়ে গেল। অপহৃতদের খোঁজে তল্লাশি চালাতে গিয়ে অপহরণ কাণ্ডের মূল হোতা-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মথুরাপুরের হোকলডাঙা এলাকা থেকে মহারাষ্ট্রের ঠাণের বাসিন্দা ৪ পর্যটককে উদ্ধার করে পুলিশ।

Advertisement

ধৃতদের শাহ জামাল গাজি, সইফুদ্দিন পুরকায়েত, কুতবউদ্দিন পুরকায়েত, ইমরান মীর, হাবিবুল্লা গাজি এবং রজ্জাক লস্কর বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। তারা মথুরাপুর, ঢোলাহাট ও রায়দিঘি থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাঁদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। উদ্ধার হওয়া ৪ পর্যটককে ঠাণে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করছে পুলিশ। সুন্দরবনের পুলিশ সুপার বৈভব তিয়ারি বলেন, ‘‘চার জনই সুস্থ রয়েছেন। পুলিশ নিজে উদ্যোগী হয়ে তাঁদের গঙ্গাসাগরে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে ফিরতে ঠাণে পাঠানো হবে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঢোলাহাট থানার ভগবানপুরের বাসিন্দা শাহ জামাল গাজি মুম্বইয়ে জরির কাজ করে। সেখানেই অপহৃতদের সঙ্গে আলাপ হয় তার। তাঁরা গঙ্গাসাগর মেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে জামাল জানায়, তার বাড়ি গঙ্গাসাগরের কাছে। এরপর ওই পর্যটকরা মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগর আসার ইচ্ছা প্রকাশ করলে কম খরচে সাগর ঘোরানোর টোপ দেয় জামাল। তবে কিছু দিন আগেই বাড়ি ফিরে আসে জামাল। ফোন যোগাযোগ করলে ওই পর্যটকদের ট্রেনে চেপে চলে আসতে বলে সে।

Advertisement

জামালের কথা মতো রওনা দেন সৈকত সুরেশ পানসারে, সাগর সুরেশ পানসারে, অরুণ শিবম বারাতে ও বিনীতা অরুণ বারাতে। বুধবার হাওড়া স্টেশনে নামলে গাড়ি নিয়ে তাঁদের আনতে যায় জামাল। সেখান থেকে গঙ্গাসাগর নিয়ে যাওয়ার বাহানায় সকলকে রামগঙ্গায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে আবার মথুরাপুরের হোকলডাঙার একটি ঘরে এনে আটকে রাখা হয়। জামাল ও তার সহয়োগীর ওই ৪ জনকে মারধর করে, তাঁদের মোবাইল ফোন এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা কেড়ে নেয় বলে অভিযোগ। আগ্নেয়াস্ত্র দেখে মুক্তিপণের দাবিও জানায়। সেই মতো ফোনে বাড়ির লোকজনকে টাকা জোগাড় করতে বলেন পুণ্যার্থীদের মধ্যে এক জন।

সেই ফোন পেয়েই ওই ব্যক্তির পরিবারের লোকজন থানায় যোগাযোগ করেন। সেখানকার থানা থেকে সরাসরি সুন্দরবন থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ফোনের টাওয়ারের লোকেশন ধরে দেখা যায়, মথুরাপুরের হোকলডাঙা থেকে ফোনটি এসেছিল। সেই মতো তল্লাশি অভিযানে নামে পুলিশ বৈভব তিওয়ারির নির্দেশে তৈরি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) সন্তোষ কুমার মণ্ডল, ডি এস পি মন্দিরবাজার, সি আই মন্দিরবাজার সহ মথুরাপুর ও রায়দীঘি থানার পুলিশের যৌথ বাহিনী। শেষ মেশ অপহৃত পর্যটকদের সকলকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ৬ দুষ্কৃতীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় ধৃতরা নিজেদের অপরাধ কবুল করেছে বলে জানা গিয়েছে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন