চারে চার।
চ্যালেঞ্জে জয়ী বিজেপি।
পঞ্চায়েত ভোটে বনগাঁ মহকুমায় চারটি পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবে সেগুলিতে বোর্ড গঠনের কথা তাদের।
কিন্তু ফল ঘোষণার পরে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, উত্তর ২৪ পরগনায় একটিও পঞ্চায়েতে তাঁরা বিজেপিকে বোর্ড গড়তে দেবেন না। সে জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তাঁরা করবেন।
জেলা তৃণমূল সূত্রে বলা হয়েছিল, নির্দল প্রার্থী-সহ সিপিএম ও কংগ্রেসে জয়ী সদস্যদেরও দলে নেওয়া হবে। বাস্তবে দেখা গেল, নির্দল-সহ বিরোধী সদস্যদের দলে টানতে ব্যর্থ তৃণমূল। জেলা বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের দাবিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছিল, তাদের জেতা ৪টি পঞ্চায়েত তাঁরাই দখল করবেন। বুধবার বাগদা ব্লকের সিন্দ্রাণী পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করে বিজেপি নেতৃত্ব সেই চ্যালেঞ্জেই জয়ী হলেন।
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের লাগামহীন সন্ত্রাসের পরেও চারটি পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করতে পারা আমাদের বড় সাফল্য। আমাদের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যেরা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, কোনও অবস্থাতেই তাঁরা দলত্যাগ করবেন না।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধর্মপুর ২, কোনিয়াড়া ২, চৌবেড়িয়া ২, সিন্দ্রাণী এই চারটি পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। ওই চারটি পঞ্চায়েতেই বোর্ড গঠন করেছে তারা।
বিজেপির অভিযোগ, দলীয় জয়ী প্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, ভয় দেখানো হয়েছে, টাকার লোভও দেখানো হয়েছে। মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দেওয়া, প্রার্থীদের অপহরণ করা— সব রকম চেষ্টা হয়েছিল শাসক দলের তরফে। সঙ্গে ছিল পুলিশের অসহযোগিতা।
তারপরেও এই ফল বিজেপির।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে বাগদায় এসে মহকুমার সমস্ত জয়ী সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানে বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত সদস্যদের কী ভাবে চলতে হবে, তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রদীপ বলেন, ‘‘ওই চারটি পঞ্চায়েতের জয়ী সদস্য ও তাঁদের পরিবারের মহিলা শিশুদের আমরা ভিনরাজ্য ও অন্য জেলায় নিয়ে গিয়ে রেখেছিলাম। তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দলের নেতা কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছেন। সর্বদা নজর রেখেছিলেন। তাঁরা সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন বলে সাফল্য এসেছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতির কটাক্ষ, ‘‘খাদ্যমন্ত্রী এখন নিশ্চয়ই রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেবেন।’’
কী বলছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব?
দলের একটি সূত্রের দাবি, ঘরোয়া কোন্দলের ফল ভুগতে হল দলকে। দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মন্তব্য করতে চাননি। অন্য এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘কী আর করব। চেষ্টা করা হয়েছিল। স্থানীয় নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছেন।’’