বিরিয়ানির গন্ধে মাতোয়ারা মোষ জখম করল ৩ জনকে

তবে ততক্ষণে কয়েকজনকে গুঁতিয়ে জখম করেছে মোষটি। তাণ্ডব চালিয়েছে দোকানে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

সন্ধে ৭টা। এক ব্যক্তি গাড়িতে কয়েকখানা মোষ নিয়ে যাচ্ছিলেন খাটালের দিকে। গাড়ি থেকে একে একে নামানো হচ্ছিল মোষেদের। হঠাৎই তাদের একজন দলছুট হয়ে ধুন্ধুমার বাধাল দোকানে ঢুকে। বহু কষ্টে, ঝুঁকি নিয়ে সেই খ্যাপা মোষকে দড়িদ়ড়া দিয়ে বেঁধে কব্জা করেছেন আশেপাশের লোকজন।

Advertisement

তবে ততক্ষণে কয়েকজনকে গুঁতিয়ে জখম করেছে মোষটি। তাণ্ডব চালিয়েছে দোকানে। লোকজনের ধারণা, দোকানটা বিরিয়ানির। তারই গন্ধে বিভোর হয়ে নাকি এমন কাণ্ড-কারখানা ঘটিয়ে ফেলেছে বেচারা মোষ!

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগরের খোশদেলপুল চুড়িপাড়ায়। বিরিয়ানির গন্ধে মাতোয়ারা মোষের কীর্তি নিয়ে বুধবারও সরগরম এলাকা।

Advertisement

মোষ খ্যাপানোর জন্য বিরিয়ানির গন্ধকেই কেন দায়ী করছেন মানুষজন?

অনেকেরই বক্তব্য, দোকানে বিরিয়ানির হাঁড়ি থেকে দেদার খুশবু বেরোচ্ছিল। না হলে অন্য কোনও দিকে না তাকিয়ে খামোখা ওই দোকানেই কেন ঢুকতে যাবে মোষ?

যুক্তিটা একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু বিরিয়ানির হাঁড়ি তো ছিল দোকানের বাইরে, যেমন থাকে আর পাঁচটা জায়গায়। তা হলে দোকানের ভিতরে কী কাজ তার? মোষের হয়ে সাফাই গাইছেন এলাকার লোক। বলছেন, আহা, মোষ বই তো নয়। কুকুর হলে না হয় ঠিক গন্ধ শুঁকে জায়গা খুঁজে নিত। ওর মাথার ঠিক ছিল না। তাই দোকানের মধ্যে ঢুকেই বিরিয়ানি খুঁজছিল।

মোষের মনস্তত্ব নিয়ে চলছে জোর ব্যাখ্যা।

এ দিকে, তার তাণ্ডবে যাঁরা জখম হলেন, তাঁদের অবস্থা কাহিল। দোকানে তখন ভালই ভিড়। তারই মধ্যে ঠেলে-গুঁতিয়ে ঢুকে পড়ে মোষ। মুহূর্তে হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যা। তারই মধ্যে সামনে পড়ে যান সালাম সর্দার, দিন মহম্মদ, হানিফ। কাউকে শিং দিয়ে গুঁতিয়ে, কাউকে পায়ের ছাঁট মেরে ভাল রকম জখম করেছে মোষটি।

দোকানের মধ্যে ঢুকে তখন তার কী তেজ। ঘন ঘন ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়ছে। শিং নাচিয়ে হুলস্থূল ফেলে দিয়েছে। বিরিয়ানির হাঁড়ি খুঁজে না পেয়ে একের পর এক চেয়ার-টেবিল, ফ্রিজ উল্টেপাল্টে দিতে থাকে সে।

ভরসন্ধ্যায় এমন উৎপাতের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দোকান মালিক মীর সাহাজি, অশোকনগর থানার ওসি পলাশ চট্টোপাধ্যায়, এমনকী ব্লক প্রশাসনের কর্তারাও। দোকানের শাটার ফেলে দেওয়া হয়। ভিতরে তখন রাগে ফুঁসছে মোষ। বাইরে জড়ো শ’য়ে শ’য়ে লোক। শাটার ভাঙার জন্য তখন তড়পানি চলছে মোষের।

ঘণ্টা দেড়েকের চেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দারা কোনও রকমে দড়ির ফাঁস দিয়ে মোষকে কাবু করেন। ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসে সে। খাটালেই পাঠানো হয় তাকে।

এক সবের মধ্যেও মোষের হয়ে কথা বলার লোকেরও অভাব নেই। এক উঠতি যুবককে বলতে শোনা গেল, ‘‘মুখের সামনে এক প্লেট বিরিয়ানি রাখলেই তো হত। হয় তো খিদেটিদে পেয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন