চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ রাজ্যের নানা প্রান্তের মানুষ। সুন্দরবনের পর্যটকেরা বেড়াতে এসেও রেহাই পাচ্ছেন না।
তালদি এলাকায় ভ্যান রিকশায় আনাজ নিয়ে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। রাস্তায় তাঁকে ঘিরে ধরল কয়েক জন যুবক। বাড়িয়ে দেওয়া হল চাঁদার বিল। রিকশা চালক টাকা দিতে না চাওয়ায় খানিকক্ষণ চলল কথা কাটাকাটি। তারপরে এক যুবক ভ্যানের চাকার হাওয়া খুলে দিল।
ক্যানিং বাসস্ট্যান্ডে এক মাল বহনকারী ভ্যানো চালককে ঘিরে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা চলছিল। অনেক দরাদরির পরে চাঁদা আদায় করেই ছাড়ল যুবকের দল। পুজোর ছুটির অনেকে আসছেন সুন্দরবনে। ক্যানিং-বারুইপুর রোড, বাসন্তী হাইওয়েতে পর্যটকদের গাড়ি আটকেও জোর করে আদায়ের কথা শোনা যাচ্ছে গত কয়েক দিন ধরে।
সুন্দরবনের পাখিরালা, ঝড়খালি এলাকায় পর্যটকদের লঞ্চ নদীর ঘাটে ভিড়লে সেখানে এসেও জুটছে চাঁদা শিকারিরা। লঞ্চেও উঠে পড়ছে তারা। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা এলাকায় কয়েক হাত অন্তর কালীপুজো হচ্ছে। মহকুমার বিভিন্ন থানা এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে সংখ্যাটা ২৩৭। বিনা অনুমতিতে আরও শতাধিক পুজো হচ্ছে। বহু জায়গা থেকেই রাস্তায় গাড়ি আটকে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠছে। এলাকার ব্যবসায়ীদের হাতেও ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে মোটা টাকা বিল। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসনের তেমন নজর থাকলে এড়ানো যেত এই পরিস্থিতি।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত সর্দার বলেন, ‘‘বাজারে আমার ছোট একটা মোবাইলের দোকান রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩০টি পুজো উদ্যোক্তা চাঁদার বিল ধরিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কিছু বলতে গেলে হুমকি শুনতে হয়।’’ প্রদীপ মণ্ডল নামে এক গাড়ি চালক বলেন, ‘‘রাস্তার মোড়ে মোড়ে চাঁদা আদায়কারীদের জুলুম চলছে। পুলিশের দেখা নেই।’’
মহকুমা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘চাঁদার জুলুমবাজি রুখতে সাদা পোশাকে পুলিশের বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি রয়েছে। তা ছাড়া, যখন যেমন অভিযোগ আসছে, সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ চাঁদার জুলুমবাজির অভিযোগে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।