পথ-আটকে: হাসনাবাদের খোসাল মোড়ে। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের জমি দখলকে কেন্দ্র করে বচসার জেরে পড়ুয়াদের ‘কটূক্তি’, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ অন্য শিক্ষকদের ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল রামেশ্বরপুর নেহেরু বিদ্যানিকেতনের ছাত্রছাত্রীরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হাসনাবাদ থানায় লিখিত অভিযোগ হয়েছে। অবরোধের ঘটনাটি সোমবার দুপুরে হাসনাবাদের খোসাল মোড়ে।
পুলিশ, স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৯২০ সালে হাসনাবাদে রামেশ্বরপুর নাসিরউদ্দিন এইচ ই স্কুল নামে একটি বিদ্যালয়ের স্থাপন করেন মহম্মদ সরিয়াতুল্লা। ১৯৬২-৬৩ সালে স্কুলের নাম পরিবর্তন করে হয় রামেশ্বরপুর নেহেরু বিদ্যানিকেতন। ১৯৭২ সালে স্কুলটি সরকারি স্বীকৃতি পায়। তখন স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক ছিলেন প্রায়ত সামসুল হক। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পরবর্তিতে সামসুল হকের ছেলেরা স্কুলের একাংশ জমি তাঁদের বলে দাবি করেন। তা নিয়ে শুরু হয় বিবাদ। উভয়পক্ষই জমি তার বলে সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানায়।
এ দিন হাসনাবাদ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে এক আধিকারিক সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। পুলিশ জানায়, তা জানতে পেরে উভয় পক্ষ জমির বিষয়ে উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে অপেক্ষা করছিল। স্কুলের জমি ফেরতের দাবিতে পোস্টার নিয়ে হাজির ছিল পড়ুয়ারা। সেই সময় গোলমাল বাধে। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকেরা মিছিল করে স্কুলের জমি ফেরত ও নিরাপত্তার দাবিতে পারহাসনাবাদ–হিঙ্গলগঞ্জ রোড অবরোধ করেন।
পড়ুয়াদের দাবি, স্কুলের জমি দখল করায় খেলার মাঠ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ায় স্কুল ঘর বাড়ানো জরুরি। তা জানানো সত্ত্বেও সিরাজুল হকেরা স্কুলের জমি ছাড়তে রাজি হচ্ছেন না। উল্টে স্কুলের একটি পুকুর দখল করে নিয়েছেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শান্তনু রায় বলেন, ‘‘স্কুলের নথি অনুযায়ী জমিতে খেলার মাঠ, হস্টেল ও পুকুর ছিল। অন্যায় ভাবে সেই সব জমি দখল করে নিচ্ছেন সিরাজুল হক এবং তাঁর ভাই। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের লোকজনের এ দিন সরেজমিন দেখতে আসার কথা ছিল। তাই পড়ুয়ারা তাদের দাবি জানাতে একজোট হয়েছিল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সে কথা জানতে পেরে সিরাজুল হক বহিরাগতদের নিয়ে এসে আমাদের উপর চড়াও হয়। গালিগালাজ করেন। শিক্ষকদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।’’
যদিও প্রয়াত সম্পাদকের ছেলে সিরাজুল হক বলেন, ‘‘বাবা স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। তিনি আমাদের জমির একাংশে স্কুল করেছিলেন। বাকি জমিতে আমরা চাষ করি। এখন স্কুল দাবি করছে, আমাদের জমি স্কুলের মধ্যে আছে। সরকারের তরফ থেকে জমি দেখতে আসার কথা ছিল। পড়ুয়ারা ক্লাস বন্ধ করে রাস্তা অবরোধ করছে দেখে গ্রামের একাংশ মানুষ প্রতিবাদ করেন। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’