Coronavirus

আতসবাজি ফাটিয়ে এখন লজ্জা পাচ্ছেন অনেকেই

দেশ জুড়ে একতার বার্তা দিতে আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালানোর আবেদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বাস্তবে বাজি, পটকার দাপটে কালীপুজোর চেহারা নিয়েছিল রবিবারের রাত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

রোশনাই: রবিবার রাত ৯টায়। নিজস্ব চিত্র

রীতিমতো আঁটঘাট বেধেই বাজি ফাটাতে নেমেছিলেন অনেকে। নানা ধরনের নিষিদ্ধ বাজি জোগাড় করে, রবিবার সকাল থেকে তা সারাদিন ধরে রোদে সেঁকাও হয়েছে। তবে পুলিশের কাছেই কোনও খবরই ছিল না এই বাজি-উৎসবের।

Advertisement

দেশ জুড়ে একতার বার্তা দিতে আলো নিভিয়ে মোমবাতি জ্বালানোর আবেদন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বাস্তবে বাজি, পটকার দাপটে কালীপুজোর চেহারা নিয়েছিল রবিবারের রাত। রাত ৯টা থেকে পরবর্তী ন’মিনিট পর্যন্ত মোমবাতি জ্বালানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। তবে তা পেরিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলল বাজির দাপট। উত্তর এবং দক্ষিণের সর্বত্রই এই হুজুগ দেখেছেন সাধারণ মানুষ। ফানুসও উড়েছে দেদার।

প্রায় সপ্তাহ দু’য়েক হল লকডাউন চলছে। অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র ছাড়া সব দোকানপাটই বন্ধ। এর মধ্যে বাজির দোকান খোলা থাকার কথা নয়। এই পরিস্থিতিতে এত বাজি কোথা থেকে এল, সে প্রশ্ন উঠছে। বারুইপুরের চম্পাহাটি এলাকার এক বাজি ব্যবসায়ী জানান, লকডাউনের জেরে বাজি তৈরি, বিক্রি সবই কার্যত বন্ধ রয়েছে। এ দিনের জন্য আলাদা করে তেমন কেউ বাজি কিনতে আসেননি বলেও জানান তিনি।

Advertisement

তা হলে এ কি ভোজবাজি নাকি?

বাজি ফাটিয়েছেন এ রকম কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়িতে মজুত ছিল বাজি। চৈত্র মাসে অনেক জায়গাতেই ধুমধাম করে কালীপুজো হয়। সেখানে প্রচুর বাজি পোড়ে। অনেক জায়গায় পুজোর প্রস্তুতি চলাকালীন লকডাউন ঘোষণা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুজো হলেও কোনওরকম উৎসব হয়নি। ফলে পুজোর জন্য মজুত করা বাজি থেকে গিয়েছিল বাড়িতেই। সেই বাজিই এ দিন রাতে ফাটিয়েছেন বলে জানালেন অনেকে। কালীপুজো ছাড়াও এই সময়ে বাসন্তী পুজো-সহ অন্য নানা উৎসব হয়। সেখানেও বাজি পোড়ানোর রীতি আছে। সেই প্রস্তুতি অনেকের সারা হয়েছিল। রবিবার রাতে ‘স্টক’ কাজে লেগে গিয়েছে!

অনেকের কাছে গত কালীপুজোয় কেনা কিছু বাজিও মজুত ছিল বলে জানা গেল। তাঁরা জানালেন, সে সবই ফাটিয়েছেন। রবিবার দুপুরে কড়া রোদে বাজি সেঁকেও রেখেছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো বাজি ফাটানোর কথা বলেননি। এই সঙ্কটকালে বাজি ফাটালে কি ভুল বার্তা গেল না? সময়টা যেখানে উৎসব পালনের নয়, বরং

সতর্ক থাকার?এ বিষয়ে কারও কোনও সদুত্তর নেই। কেউ কেউ আমতা আমতা করে জানালেন, আসলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের উৎসাহ দেওয়ার জন্যই বাজি ফাটিয়েছেন। বারুইপুরের বাসিন্দা এক যুবকের কথায়, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বাজি পোড়ানো নিয়ে যে ভাবে কটাক্ষ শুরু হয়েছে, বুঝতে পেরেছি ভুল করে ফেলেছি। দেশের এই পরিস্থিতিতে বাজি পোড়ানোটা উচিত কাজ হয়নি।’’

দেরিতে হলেও বোধোদয় হল কি তবে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন