Coronavirus in West Bengal

লালারস দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন অনেকেই

অনেক ক্ষেত্রেই লালারস দেওয়া মানুষটি রিপোর্ট আসার আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করছেন।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২০ ০৬:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি

কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন। কারও মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই সব মানুষের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্তারা তাঁদের বাড়ি থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। এমনকী বাড়িতে যতটা সম্ভব আলাদা থাকতে বলা হচ্ছে। কারণ, এর ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই লালারস দেওয়া মানুষটি রিপোর্ট আসার আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। পরে রিপোর্ট এলে জানা যাচ্ছে, সেই মানুষটি করোনা পজ়িটিভ। ততক্ষণে তিনি অবশ্য তাঁর সংস্পর্শে আসা মানুষদের তালিকা দীর্ঘ করে ফেলেছেন। এমন ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা উদ্বিগ্ন। এর ফলে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকছে। সংস্পর্শে আসা মানুষের তালিকা তৈরি করতেও স্বাস্থ্যকর্মীদের যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই সংস্পর্শে আসা সব মানুষকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

সম্প্রতি বনগাঁ ব্লকে এমনই দু'টি ঘটনা ঘটেছে। স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ ব্লকের বাসিন্দা এক চিরুনি কারখানার মালিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা কারখানায় কাজ করা শ্রমিক এবং পরিবারের লোকজনের লালারস সংগ্রহ করা হয় স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। তাঁদের নির্দিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্স করে বাড়ি থেকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানেই তাঁদের লালারস সংগ্রহ করে নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল। লালারস সংগ্রহ করে তাঁদের আবার অ্যাম্বুল্যান্স করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। তাঁদের স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তাঁরা যেন কেউ বাড়ি থেকে বের না হন। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাড়িতেই থাকবেন।

অথচ সোমবার যখন করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছয় ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের কাছে, তখন দেখা যায়, ওই চিরুনি শ্রমিক করোনা পজ়িটিভ। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি বাড়ি নেই। বাগদা এলাকায় তিনি তাঁর আর একটি বাড়িতে গিয়েছেন। সেখান থেকে গিয়েছেন শ্বশুরবাড়ি। আপাতত তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তিনি কত মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা ভেবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।

এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। দিন কয়েক আগে বনগাঁ ব্লকের বাসিন্দা এক পুলিশকর্মী লালারস দিয়ে এসে বাড়িতে না থেকে বিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন। পরে রিপোর্ট আসে তিনি পজ়িটিভ। দিন কয়েক আগে বনগাঁর একটি বাজারে হঠাৎ এক ব্যক্তিকে দেখে হুলুস্থুল পড়ে যায়। কারণ, তিনি করোনা-আক্রান্ত এক ব্যক্তির আত্মীয়। তাঁর বাড়ি থাকার কথা থাকলেও তিনি বাজারে বেরিয়েছিলেন।

পরপর এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। বনগাঁর বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায় বলেন, ‘‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিই, রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কেউ যেন বাড়ি থেকে না বের হন। তারপরও কেউ কেউ শুনছেন না। আমরা তো বাড়িতে পাহারা বসাতে পারি না। মানুষকে সচেতন হবে। এমন ঘটনায় গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন