কোথায় দূরত্ব? কোথায় লকডাউন? মঙ্গলবার বসিরহাটের পিঁফার বাজারে। —ছবি: নির্মল বসু
নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না ভিড়।
প্রথম দু’দিন তবু অনেকেই ঘরবন্দি রেখেছিলেন নিজেদের। কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে, বাড়ছে মানুষের ঘর থেকে বেরনোর প্রবণতা। তাতে বিপদ যে বাড়ছে, তা নিয়ে বারবার সতর্ক করছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে সকলে সতর্ক হচ্ছেন আর কই! মঙ্গলরবারও দুই জেলা জুড়ে দেখা গেল সেই একই ছবি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, একবার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হলে তা হু হু করে বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে রোগ ঠেকাতে ঘরবন্দিই একমাত্র কার্যকর দাওয়াই। তবু সেই সতর্কবাণী সকলের কানে পৌঁছলে তো! মঙ্গলবারও সকালের ছবিটা একই রকম ছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। কাঁচরাপাড়া, নৈহাটি, শ্যামনগর, ইছাপুর তো বটেই, ব্যারাকপুরের বাজারগুলিতেও সকালের ভিড়ের ছবি দেখে বোঝা দায় যে, লকডাউন চলছে। অন্যান্য দিন যেমন বাজারে ভিড় থাকে এ দিনও তেমনই ছিল। মানুষ গা ঘেঁষাঘেষি করেই আনাজ-মাছ বেছে কিনছেন। ভিড়ের মধ্যে এক জনের গায়ের উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে অন্যজন দিব্যি কচি ঝিঙে বেছে নিচ্ছেন। বসিরহাটের বাজারগুলিতে সকাল থেকে পুলিশ মাইকে দূরত্ব মেনে কেনাকাটার প্রচার করেছে। তবুও ভিড়ের সে কথা মাথায় থাকছে না। পুলিশ প্রথম দিকে যে মেজাজে ছিল, তা অনেকটাই স্তিমিত। ফলে মানুষ ছুটির মেজাজে রাস্তায় ঘুরছেন।
একই অবস্থা বনগাঁ-হাবড়াতেও। মঙ্গলবারও বন্ধ করা যায়নি বহু চায়ের দোকান। সেখানেই জটলা হচ্ছে বেশি। আলোচনার বিষয়ের প্রায় সবটাই করোনাভাইরাস। কিন্তু সতর্কতা মানতে ঢিলেমি কমছে না আড্ডাবাজদের।
লকডাউনকে উপেক্ষা করে মঙ্গলবার সকালে যথারীতি ভিড় উপচে পড়ে ভাঙড়ের বিভিন্ন বাজারে। ভাঙড় বাজারে মাছের দোকানগুলিতে ধাক্কাধাক্কি করে মাছ কিনতে দেখা গেল বহু মানুষকে। এ দিন বাজার পরিদর্শনে এসে এই দৃশ্য দেখে ফাঁকা জায়গায় বাজার সরানোর সিদ্ধান্ত নেন বিডিও সৌগত পাত্র।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে মাছ বাজারকে ভাঙড় কলেজ মাঠে ফাঁকা জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এ দিনও প্রশাসনের তরফে বাজারে আসা প্রত্যেককে মালপত্র কেনার সময় দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হয়। বিডিও বলেন, ‘‘ভাঙড় বাজারে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই বাজার করতে গেলে এক সঙ্গে বহু মানুষকে হুড়োহুড়ি করতে হচ্ছে। সে কারণে মাছ বাজারকে ফাঁকা জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
জয়নগরের দক্ষিণ বারাসত বাজারও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফাঁকা জায়গায়। মঙ্গলবার থেকে আগের বাজারের কাছেই একটি মাঠে বাজার বসছে।
ক্যানিং মহকুমা জুড়ে এ দিনও সকালে বাজারে মানুষের ভিড় চোখে পড়েছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমেছে। গ্রামের ভিতর, গলির মধ্যে দোকানপাট খোলা ছিল। সেখানেও মানুষজন ভিড় করেছেন, চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়েছেন।
ঘুটিয়ারিশরিফ এলাকায় সারা দিন ধরেই বাড়ির বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দোকানপাট খোলা থাকায় সেখানে ভিড় জমিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।