Cyclone Amphan

জনরোষ থেকে বাঁচতে বাঁশবাগানে আশ্রয়

দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে আন্দোলনে নেমেছে বামেরা। গোপালনগর এলাকায় প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান-সহ তৃণমূলের আরও কেউ কেউ  দুর্নীতিতে জড়িত বলে অভিযোগ বামেদের।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ০৫:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি

বনগাঁ ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের টাকা বিলি নিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠছে। ঘাটবাওর পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য গ্রামবাসীর ক্ষোভ থেকে বাঁচতে সোমবার রাতে বাঁশবাগানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাত ১১টা নাগাদ পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। আপাতত সেখানেই রয়েছেন তিনি। অভিযোগ, ওই সদস্য তাঁর এক পরিচিতকে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। ওই পরিচিত ব্যক্তির পাকা রয়েছে। সে বাড়ির কোনও ক্ষতিও হয়নি ঝড়ে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাতে এলাকার লোকজন ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির আশপাশে জটলা করেন। তিনি বাঁশবাগানে আত্মগোপন করেন। অভিযোগ আছে ওই পঞ্চায়েতের আরও এক তৃণমূল সদস্যকে নিয়েও। মানস ভট্টাচার্য নামে ওই সদস্যের দাবি, অন্য এক পরিচিতের জন্য টাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। মানসের পাকা বাড়ি আমপানে অক্ষতই। তিনি বলেন, “ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে জমি-বাড়ির দলিল এবং পরচা জমা দিতে হচ্ছে। অনেক ক্ষতিগ্রস্তের জমির দলিল নেই। তেমনই এক জনের জন্য নিজের বাড়ির নথি দিয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে সেই টাকা তাঁকেই দিয়েছি।” মানস জানাচ্ছেন, যাঁকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়েছেন, সেই টাকা তিনি খরচ করে ফেলেছেন। ফলে মানসের নিজের গাঁটের থেকে টাকা ফেরত দিতে হয়েছে বলে দাবি মানসের। ঘাটবাওড় পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের চামেলি মণ্ডল বলেন, ‘‘গরিব মানুষের অনেকের নথিপত্র ছিল না। ফলে পঞ্চায়েত সদস্য বা আরও কেউ কেউ নিজেদের নথি দেখিয়ে অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়েছিলেন। গরিব মানুষকেই সেই টাকা দেওয়া হয়।’’

দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে আন্দোলনে নেমেছে বামেরা। গোপালনগর এলাকায় প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান-সহ তৃণমূলের আরও কেউ কেউ দুর্নীতিতে জড়িত বলে অভিযোগ বামেদের। সিপিএম নেতা পঙ্কজ ঘোষ বলেন, “বনগাঁ ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে যাঁরা টাকা পেয়েছেন, তাঁদের আশি শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত নন।” বিজেপির পক্ষ থেকে পঞ্চায়েতগুলিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি চলছে। ধর্মপুকুরিয়া পঞ্চায়েতের এক সদস্যের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জনরোষে সেখানকার এক পঞ্চায়েত সদস্য পাটখেতে লুকিয়ে ছিলেন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ বলেন, “আমাদের দলের কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা নিয়ে থাকেন, তা হলে তা ফিরিয়ে দিতে হবে।” তাঁর অভিযোগ, বিজেপির অনেক নেতা-কর্মী এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজনেরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা নিয়েছেন। বিজেপির কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্যের নামেও একই অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের সাফাই, “কালিমালিপ্ত করতেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানেরা আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের আ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকিয়ে দিয়েছেন।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন