Barasat Train Signal Failure

বারাসতে সিগন্যাল পয়েন্ট খারাপ হয়ে ট্রেন বিভ্রাটের জেরে দুর্ভোগ যাত্রীদের, এখনও বহু স্টেশনে আটকে ট্রেন

ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে যাত্রীদের কেউ প্ল্যাটফর্মে বসে রয়েছেন, তো কেউ বসে রয়েছেন দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের ভিতরে। অফিসে যাওয়ার সময়ে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটার কারণে বিপাকে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বারাসত শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৩ ১২:১১
Share:

বামনগাছি স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকায় দুর্ভোগ নিত্যযাত্রীদের। —নিজস্ব চিত্র।

আর পাঁচটা কর্মব্যস্ত দিনের মতোই শুক্রবার ভোরে ট্রেনে চেপেছিলেন বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার নিত্যযাত্রীরা। কিন্তু বারাসতে সিগন্যালজনিত ত্রুটির কারণে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হল তাঁদের। রেলবিভ্রাটের জেরে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে ট্রেন চলাচল ব্যাহত। অনেকগুলি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে যাত্রীদের কেউ প্ল্যাটফর্মে বসে রয়েছেন, তো কেউ বসে রয়েছেন দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের ভিতরে। অফিসে যাওয়ার সময়ে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটার কারণে বিপাকে পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের চোখেমুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ বারাসতে পয়েন্ট সিগন্যাল পয়েন্ট খারাপ হওয়ার কারণে বনগাঁ এবং হাসনাবাদ আপ এবং ডাউন ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বনগাঁ থেকে শিয়ালদহগামী দ্বিতীয় ট্রেন বামনগাছি স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে শিয়ালদহের অন্য শাখার ট্রেনেও। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সিগন্যাল পয়েন্ট ঠিক হয়। প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও তা স্বাভাবিক হয়নি। দীর্ঘ ক্ষণ পর পর ট্রেন আসার কারণে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে চাপতে অসুবিধা হচ্ছে বলেই অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। অনেকে আবার বিরক্ত হয়ে ট্রেন থেকে নেমে যাচ্ছেন। বনগাঁ, চাঁদপাড়া, ঠাকুরনগর, গোবরডাঙা, হাবড়া, অশোকনগর— সব স্টেশনেই যাত্রিভোগান্তির একই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।

নিত্যযাত্রী দীপান্বিতা ভৌমিকের কথায়, ‘‘ঘণ্টা দেড়েক বারাসত স্টেশনে আটকে আছি। মালতীপুর যাওয়ার কথা হাসনাবাদের ট্রেনে। যে ট্রেন ৯টা ৬ মিনিটে বারাসত আসার কথা সেই ট্রেন এসেছে ৯টা ৪০ মিনিটে। তার পর থেকে ট্রেন স্টেশনেই দাঁড়িয়ে। তার মধ্যেই আরও একটি হাসনাবাদের ট্রেন আসার ঘোষণা করা হয়েছে। আপের বনগাঁর ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেক ট্রেন দাঁড়িয়ে। চারিদিকে মানুষের ভিড়। তার মধ্যেই অনেকে ট্রেনে চাপার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ আবার অসহায় হয়ে ট্রেন থেকে নেমে পরছেন। খুবই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। অফিস যাওয়ার সময় এই ভোগান্তি মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।’’

Advertisement

বনগাঁ থেকে প্রতি দিন মাঝেরহাটে যাওয়া এক নিত্যযাত্রী জীবন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মাঝেরহাট লোকালে চেপেছি অফিস যাওয়ার জন্য। এখন ১০:১৫ বাজে। এখনও ট্রেন অশোকনগরের দাঁড়িয়ে। তা হলে ভেবে দেখুন আমরা কখন অফিস যাব আর কী ভাবে যাব?’’

রেলের তরফে জানানো হয়েছে দমদম-বারাসত-বনগাঁ শাখায় ছ’টি লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে এবং আরও ১৪টি লোকাল ট্রেন দেরিতে চলছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার সময় পর্যন্ত বহু ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে। ট্রেন চলাচল সম্পর্কিত অ্যাপে দেখা যাচ্ছে, ১০টা ১০-এর ট্রেন এখনও গোবরডাঙা ছাড়েনি। অর্থাৎ, প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে চলছে। এর আগের ৯টা ২৫-এর ট্রেনও প্রায় আড়াই ঘণ্টা লেট করে আগের স্টেশন হাবড়ায় দাঁড়িয়ে।

এই প্রসঙ্গে, পূর্ব রেলের মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “বারাসতে একটি পয়েন্ট খারাপ হয়ে যাওয়ায় বনগাঁ এবং হাসনাবাদ শাখায় ট্রেন চলাচল ভোরবেলা থেকে বন্ধ ছিল। ‘সিগন্যালে অন পেপার’-এও কাজ করা যায়নি। ৯টা নাগাদ পয়েন্ট ঠিক হয়। বনগাঁ শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু করা গেলেও হাসনাবাদ শাখায় সকাল ১১টা পর্যন্ত ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি। কাজ চলছে। দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন