স্যানিটাইজ় করা হচ্ছে এলাকা। অশোকনগরে। ছবি: সুজিত দুয়ারি
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকার বাসিন্দা করোনা পজ়িটিভ এক মহিলার মৃত্যু হল শুক্রবার রাতে।
পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘করোনা পজ়িটিভ বর পঞ্চান্নর এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বারাসত কোভিড হাসপাতালে। তাঁর বাড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সম্প্রতি অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। বাড়িতে ফিরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় এই প্রথম কোনও করোনা পজ়িটিভ রোগী মারা গেলেন। মৃতের স্বামী ও মেয়েও করোনা পজ়িটিভ। তবে তাঁরা এখন সুস্থ।
পরিযায়ী শ্রমিকেরা এলাকায় ফিরতেই অশোকনগর-কল্যাণগড় এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রবোধ বলেন, ‘‘পুরএলাকায় এখনও পর্যন্ত ২৭ জন মানুষ পজ়িটিভ হয়েছেন। তার মধ্যে ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। বাকিদের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ রয়েছে। আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে চলায় আমরা চিন্তিত।’’
করোনা পজ়িটিভ মানুষের সংখ্যা বাড়লেও কিছু মানুষের মধ্যে থেকে করোনা নিয়ে সচেতনতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। মাস্ক ছাড়াই বাজার-হাটে বেরোচ্ছেন অনেকে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতেও দেখা যাচ্ছে না।
এ দিকে, একের পর এক মানুষ করোনা পজ়িটিভ হওয়ায় নিভৃতবাস তৈরি করা, এলাকা জীবাণুমুক্ত করা, আক্রান্তদের চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষকে। অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকেরা কেউ কেউ নিভৃতবাসে না থেকে পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। পড়শিদের সংস্পর্শে আসছেন। বাসিন্দাদের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকদের সকলের লালারস সংগ্রহ করা হোক।
প্রশাসনিক কর্তারা বলেন, ‘‘লকডাউন শিথিল হতেই কিছু মানুষের ধারণা হয়েছে, করোনা সংক্রমণ কমে গিয়েছে। কিন্তু সকলকে বুঝতে হবে, এখন আমাদের নিজেদের আরও বেশি করে সচেতন থাকতে হবে। বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ করে তুলতে হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, সোম ও মঙ্গলবার কল্যাণগড় বাজার বন্ধ থাকছে। পুলিশ-পুরসভার তরফে মানুষকে সচেতন করতে চলছে মাইক প্রচার। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া মানুষদের পুলিশের তরফে বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। প্রবোধ বলেন, "সকলের কাছে অনুরোধ লকডাউন মেনে চলুন, হাত স্যানিটাইজ় করুন, মাস্ক ব্যবহার করুন।’’
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল বসিরহাটে। শনিবার পর্যন্ত ১৪ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘গত তিন দিন আগে ২৮৫ জন থেকে বেড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩২২ হয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ জন পরিয়াযী শ্রমিক। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ১৯৬ জন বাড়ি ফিরেছেন।’’