মন্দিরবাজার

ভক্তেরা বুকের রক্ত দেন দেবীর আরাধনায়

বুকে কাঁটা ফুটিয়ে কয়েক ফোটা রক্ত বের করে বেল পাতায় রেখে করুণাময়ী মায়ের পুজোয় দেওয়া হয়। মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণপুর মহাশ্মশানের এ ভাবেই তন্ত্রমতে পুজো চলে আসচ্ছে বহু বছর ধরে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৬
Share:

বুকে কাঁটা ফুটিয়ে কয়েক ফোটা রক্ত বের করে বেল পাতায় রেখে করুণাময়ী মায়ের পুজোয় দেওয়া হয়। মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণপুর মহাশ্মশানের এ ভাবেই তন্ত্রমতে পুজো চলে আসচ্ছে বহু বছর ধরে।

Advertisement

কালীঘাটের আদি গঙ্গা প্রবাহিত হয়েছিল বারুইপুর, জয়নগর, মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণপুর হয়ে। মিশেছিল সাগরের সঙ্গে। এক সময়ে প্রবাহিত আদি গঙ্গার তীরে গড়ে ওঠে ওই মহাশ্মশান।

সে সময়ে শ্মশানের আশেপাশে কোনও বসতি ছিল না। গভীর জঙ্গলে ঘেরা শ্মশানের পাশে একটি একটি খুপরি ঘরে বসবাস করতেন এক পুরোহিত। শেয়াল আর শকুনের পাল এলাকায় দাপিয়ে বেড়াত। কথিত রয়েছে, ওই পুরোহিত একদিন স্বপ্নাদেশ পান, গঙ্গাতীরে কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করলে সকলের মঙ্গল হবে। সেই থেকেই চলছে ওই শ্মশানের পুজো।

Advertisement

ঝাঁ চকচকে মন্দিরে প্রায় ৬ ফুট উচ্চতার কালো রঙের করুণাময়ী দেবীর মূর্তি। পিছনে পর পর ধাপে ধাপে সাজানো রয়েছে ১০৮টি নরমুণ্ড।

দেবীর গলায় রয়েছে ১২টি নরমুণ্ড ও মহিষের একটি মুণ্ড। সামনে পঞ্চমণ্ডির আসনে বসে পুরোহিত তন্ত্রমতে পুজো সারেন। তবে পুজো শুরু হওয়ার আগে মহাশ্মশানে, যেখানে শবদাহ হয়, তার পোড়া কয়লার উপরে পুজো হয়। অপমৃত্যুর ঘটনায় আত্মার শান্তি কামনাই যার উদ্দেশ্য।

পুজোর প্রবীণ পুরোহিত বছর শ্যামল চক্রবর্তী জানালেন, এক সময়ে পাঁঠা বলি দিয়ে সেই রক্ত মাকে নিবেদন করা হতো।

বছর ষাটেক আগে বলি বন্ধ হয়ে যায়। তাই এখন বলির পরিবর্তে ভক্তেরা নিজেদের বুকে কাঁটা ফুটিয়ে কয়েক ফোটা রক্ত বের করে পুজোয় দেন বলে জানা গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন