প্রতীকী ছবি।
ছোটখাটো হুমকি-তোলাবাজিতে অনেক দিন ধরেই হাত পাকিয়েছিল কাঁচরাপাড়ার সুদীপ্ত দাস। তারপরে নামে ছাঁট লোহার কারবারিদের কাছ থেকে তোলা আদায়ে। প্রথমে অবশ্য শিল্পাঞ্চলের এক নেতার হাত ধরে সরাসরি ছাঁট লোহার নিলামে ঢুকতে চেয়েছিল সুদীপ্ত। কিন্তু পোড় খাওয়া এক ব্যবসায়ীর কাছে সুবিধা করতে পারেনি। তখন শুরু করে তোলা আদায়।
কী ভাবে শাসানো হত ব্যবসায়ীদের?
পুলিশ জানতে পেরেছে, কাঁচরাপাড়া রেল ইয়ার্ড থেকে নিলামে ছাঁট লোহা কিনেও ট্রাকে তুলে এলাকার বাইরে যেতে পারতেন না ওই ব্যবসায়ী। সুদীপ্ত ও তার দলবল গিয়ে শাসানি দিত, টাকা না দিলে লোহা তোলা যাবে না। বাধ্য হয়ে টাকা দিতেন ওই ব্যবসায়ী, এমনও জানতে পারছেন তদন্তকারীরা।
প্রশ্ন উঠছে, এক সময়ে বাম-ঘনিষ্ঠ ওই লোহার কারবারি পরে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্য বাড়ান। তারপরেও তৃণমূলের আশ্রয়ে থাকা সুদীপ্তরা কী ভাবে তাঁর থেকে টাকা আদায় করত? দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, শাসক দলের এক গোষ্ঠী ওই ব্যবসায়ীর পাশে থাকলেও অন্য গোষ্ঠীর মদতে সুদীপ্তদের রমরমা চলত। লোহার কারবারিদের কাছ থেকে তোলার টাকার বখরা কি একাই হজম করত সুদীপ্ত, তাকে গ্রেফতার করার পরে দলের অন্দরে ঘুরছে এই প্রশ্নও।
এক সময়ে কাঁচরাপাড়ার ভূতবাগানে থাকত সুদীপ্ত। পরে হালিশহরে পেল্লায় বাড়ি বানায়। ছাঁট লোহার কারবারকে ঘিরে তোলাবাজিতে তার প্রভাব বাড়ে। তা নিয়েই রাজার সঙ্গে মূল বিরোধ। সম্প্রতি একটি বাজার কমিটি দখলকে কেন্দ্র করে দু’জনের ঝামেলা চরমে ওঠে।
গত দেড়-দু’বছরে রাজা-সুদীপ্তর বাড়বাড়ন্তে অতিষ্ঠ ছিলেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। দোকান-বাজারে ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে তোলা আদায়ের মাত্রা চরমে ওঠে। তোলা দিয়েও যে নিশ্চিন্তে কারবার করা যেত, তা নয়। ব্যবসায়ীদের অনেকে জানাচ্ছেন, এক দল তোলা নিয়ে গেলে তারপরে অন্য দল এসে ফের তোলা চাইত। দু’পক্ষের কাছেই ধমক-চমক শুনতে হত ব্যবসায়ীদের।