সব্জি বিক্রি করে মিলছে না সঠিক দাম

সারা বছরই চাষের কাজে যুক্ত থাকেন তিনি। ফসল ফলিয়েই সরকার থেকে মিলেছিল কৃষি রত্ন। কিন্তু এখন টাকার অভাবে বন্ধ চাষ। ক্ষতি হচ্ছে ফসলেরও।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫০
Share:

এগোচ্ছে না চাষের কাজ। নিজস্ব চিত্র।

সারা বছরই চাষের কাজে যুক্ত থাকেন তিনি। ফসল ফলিয়েই সরকার থেকে মিলেছিল কৃষি রত্ন। কিন্তু এখন টাকার অভাবে বন্ধ চাষ। ক্ষতি হচ্ছে ফসলেরও।

Advertisement

মথুরাপুর ১ ব্লকের বাপুলির চক গ্রামের বাসিন্দা গোপাল হালদার প্রায় ৩৫ বছর ধরে ধান ও সব্জি চাষ করেন। ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঢ্যাঁড়স, বিন, বেগুন, উচ্ছে, বটবটি, টমেটো শশা কোনওকিছুই বাদ যায়নি তাঁর খেতে। ফলিয়েছেন মুসুরির ডালও। কিন্তু ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর থেকে আর কোনও শ্রমিক তিনি পাচ্ছেন না। ফলে সব্জি কাটাও হচ্ছে না। তিনি জানান, সব্জি চাষের জন্য প্রত্যেক দিন ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক লাগে। বর্তমানে শ্রমিকের মজুরি ৩০০ টাকা। খুচরো টাকার অভাবে সেই টাকাও দিতে পারছেন না গোপালবাবু। শুধু তাই নয় কিনতে পারছেন না কীটনাশক ও বীজ। এই অবস্থা শুধু গোপালবাবুর নয়, এলাকার সমস্ত চাষিরাই এখন এই সমস্যায় পড়েছেন। চাষের জিনিসপত্র কিনতে গেলে এখন পুরনো টাকা দোকানে নিচ্ছে না। আর নতুন টাকা বলতে বেশির ভাগ দু’হাজার টাকা। যার ভাঙানি পেতে হিমসিম খেতে হচ্ছে মানুষকে।

চাষের সব্জি পাইকারি বিক্রি হয় ঘোড়াদল, বাপুলি বাজার, ও মথুরাপুরে। সেখানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সব্জি নিয়ে সঠিক দাম দিচ্ছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের। খুচরো টাকার অভাবেই এমনটা হচ্ছে।

Advertisement

প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় সে ভাবে ব্যাঙ্কও নেই। আর যদিও বা থাকে তার লিঙ্ক অর্ধেক সময় সমস্যা করে বলে জানান এলাকাবাসী। সে কারণে টাকা তোলা ও জমা দিতে গেলে পুরো দিনটি ব্যাঙ্কের লম্বা লাইনে কেটে যায়।

একই কথা বললেন রায়দিঘির নগেন্দ্রপুর এলাকার এক চাষি। তাঁর চাষের জমিতে সারা বছর উচ্ছে ও কাঁচা লঙ্কার চাষ হয়। সার, কীটনাশক থেকে শুরু করে সব কিছুই কিনতে হয়। কিন্তু নোটের সঙ্কটে তিনিও দিশেহারা। রহিম গাজি নামে ওই চাষি জানান, চাষ করা উচ্ছে বাজারে পাইকারি নিচ্ছে পুরনো ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট দিয়ে। তা ছাড়া, ওই নোট কেউ নিতেও চাইছেন না। ব্যাঙ্ক থেকে এক দিনে যে টাকা মিলছে তা চাষের পক্ষে যথেষ্ট নয় বলে তিনি জানান।

মথুরাপুর ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক নিলয় পাইন বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেক বছর এই এলাকায় শাকসব্জি চাষের টার্গেট থাকে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমি। কিন্তু নোটের অভাবে তা মাত্র ১২০ হেক্টর জমিতে হচ্ছে।’’ তবুও এলাকার চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। কিন্তু নোট সঙ্কট মিটছে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement