তখনও-জ্বলছে: আগুন নেভানোর চেষ্টায় দমকল কর্মীরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
আগুনে পুড়ল করাতকল, দু’টি ঘর-সহ প্রচুর আসবাবপত্র। মঙ্গলবার রাত ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ শহরের বক্সিপল্লি এলাকায়। বাসিন্দারা প্রথমে জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। উল্টে আগুন আশপাশের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কী ভাবে ওই আগুন লাগল, পুলিশ ও দমকল তা খতিয়ে দেখছে। পুলিশ জানিয়েছে, সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানসিক ভারসাম্যহীন এক মহিলার নজরে আসে, করাতকল থেকে আগুন বেরোচ্ছে। তিনি চিৎকার শুরু করেন। কয়েক জন বাসিন্দার ঘুম ভেঙে যায়। তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, করাতকল দাউদাউ করে জ্বলছে। আশপাশের মহিলা-পুরুষেরা বেরিয়ে আসেন। বালতি, মগ, গামলা হাতের কাছে যে যা পেয়েছেন— তাতে জল ভরে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলে। বাড়িতে পাম্প চালিয়ে পাইপ দিয়ে জল ঢালা হয়। কিন্তু আগুন নেভানো যায়নি। পাশের দু’টি বাড়িতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
করাতকলের পাশে থাকেন ব্যবসায়ী গোপাল পাল। গভীর রাতে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রী শান্তিলতা। ধোঁয়ার গন্ধ নাকে এসেছিল। কিছু চোখে পড়েনি। ফের গিয়ে শুয়ে পড়েন। হঠাৎ চোখে পড়ে, ঘরের জানলায় আগুন। চিৎকার করে স্বামীকে ডেকে তোলেন তিনি। পাশের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন ছেলে-বৌমা, নাতি। তাঁদেরও ডাকেন। ততক্ষণে গোপালের বাড়ির দু’টি ঘরে আগুন ধরে গিয়েছে। সেখানে অবশ্য কেউ ছিলেন না।
পাশের অমরকৃষ্ণ টিকাদারের বাড়ির পাইপ লাইন পুড়ে যায়। ঘরের দেওয়াল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লোকজন ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন।
করাতকলের সঙ্গে ছিল প্রচুর কাঠপাতা। সে সব পুড়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে করাতকল মালিক অশোক অধিকারী আসেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, ‘‘চোখের সামনে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেল। সব শেষ গেল। কী ভাবে আগুন লাগল বুঝতে পারছি না।’’ এলাকাবাসীর ক্ষোভ, চল্লিশ মিনিট পরে দমকল এসেছে। আগে এলে ক্ষয়ক্ষতি আরও কমানো সম্ভব হত। দমকল অবশ্য জানিয়েছে, খবর পাওয়ার পরেই আসেন তাঁরা।