Khardah’s Arm Business

বন্দুক-পিস্তল খারাপ হলেই ডাক পড়ত, সারিয়ে দিতেন অনায়াসেই! কী ভাবে খড়দহের মধুসূদনের অস্ত্র কারবার চলত?

খড়দহের এই অস্ত্র ব্যবসা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই খোঁজখবর চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার হন খড়দহের মধুসূদন ওরফে লিটন মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৫ ১৫:১৪
Share:

ধৃত মধুসূদন ওরফে লিটন মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

রাইফেল, পিস্তল খারাপ হলেই ডাক পড়ত তাঁর। কেউ কেউ আবার গোপনে তাঁর কাছে অস্ত্র নিয়ে আসতেন সারাইয়ের জন্য। এ ভাবেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে অস্ত্রের কারবার চালাচ্ছিলেন মধুসূদন ওরফে লিটন মুখোপাধ্যায়। নিজের হাতেই বন্দুক, পিস্তল মেরামত করতেন! মোটা টাকার বিনিময়ে অস্ত্র সারাই করতেন লিটন।

Advertisement

খড়দহের এই অস্ত্র ব্যবসা নিয়ে কয়েক দিন ধরেই খোঁজখবর চালাচ্ছিল পুলিশ। বেআইনি অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দিনকয়েক আগে গ্রেফতার হন বিহারের মুঙ্গেরের এক ব্যক্তি। সেই ব্যক্তিকে জেরা করে উঠে আসে লিটনের নাম। মুঙ্গেরের ওই ব্যক্তির সঙ্গে অস্ত্র ব্যবসা চালাতেন লিটন, এমনই জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই সোমবার খড়দহের একটি আবাসনে অভিযান চালায় ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর।

তল্লাশি অভিযানের সময় উদ্ধার হয় ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং এক হাজার রাউন্ড গুলি। শুধু তা-ই নয়, ওই ফ্ল্যাটের মালিক লিটনের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে কয়েক লক্ষ টাকাও। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মুঙ্গেরের ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কার্তুজ কিনতেন লিটন। কেউ যদি তাঁর কাছ থেকে কার্তুজ চাইতেন, তবে মোটা টাকার বিনিময়ে মুঙ্গের থেকে এনে দিতেন।

Advertisement

কী ভাবে এত দিন গোপনে অস্ত্র কারবার চালাচ্ছিলেন লিটন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেন তাঁর ফ্ল্যাটে এত অস্ত্র মজুত ছিল, কারা আসতেন অস্ত্র কিনতে, তাঁর সঙ্গে কাদের যোগাযোগ ছিল— এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় লিটন জানিয়েছেন অনেক দিন তিনি এই ব্যবসা করছেন। তবে আর তাঁর এই ব্যবসা চালাতে ভাল লাগছিল না। ভেবেছিলেন পরের বছরই অস্ত্র ব্যবসা বন্ধ করে দেবেন। তার আগে এ ভাবে পুলিশের জালে জড়িয়ে যাবেন ভাবতে পারেননি লিটন!

সামনের বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের জন্যই কি অস্ত্র মজুত করছিলেন লিটন? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি অস্ত্র মজুত রাখা এবং তা বিক্রি করার অভিযোগে অস্ত্র আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে রহড়া থানার পুলিশ এবং ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ৬৬ বছরের লিটন আসলে পানিহাটির বাসিন্দা। ২০০৬ সালে একবার অস্ত্র আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। খড়দহ থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। ২০২০ সালে খড়দহের রিজেন্ট পার্কের একটি আবাসনে ফ্ল্যাট কেনেন লিটন। সেখান থেকেই ওই অস্ত্রভান্ডার মিলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement