পরখ: গাদিয়াড়ায় ফেরিঘাটে যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট পরীক্ষা করে দেখছেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: সুব্রত জানা
জলপথে যাত্রী পরিবহণে নিরাপত্তা বাড়াতে হাওড়ার ২৮টি জেটিঘাটে ‘জলসাথী’ নিয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। তাঁদের কাজ হবে, নদী পারাপারের সময়ে যাত্রীরা যাতে কোনও বিপদে না পড়েন, তা দেখভাল করা।
সোমবার হাওড়ার শ্যামপুরে গাদিয়াড়ায় প্রস্তাবিত বাসস্ট্যান্ডের শিলান্যাস করতে এসে এ কথা জানান পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়ার ২৮টি জেটিঘাটেই তিন জন করে জলসাথী নিয়োগ করবে পরিবহণ দফতর। তাঁদের কাজকর্ম দেখাশোনা করবে পুলিশ। আগামী মাস থেকেই নিয়োগ শুরু হয়ে যাবে। ওই সব জেটিঘাট সংস্কারের জন্য ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। আরও টাকা দেওয়া হবে।’’
জলপথ পরিবহণে রাজ্য সরকার যে জোর বাড়াচ্ছে, এ দিন মন্ত্রীর কথায় তা স্পষ্ট। বেশ কিছু প্রকল্পের কথা জানান শুভেন্দু। তার মধ্যে যেমন রয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় হাওড়া থেকে ফরাক্কা এবং নন্দীগ্রাম পর্যন্ত নদীর ধারের সৌন্দর্যায়ন, নদীকে পরিষ্কার রাখার মতো প্রকল্প, তেমনই রয়েছে পণে পরিবহণের কথাও। শুভেন্দু জানান, বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় যে প্রকল্পটি হচ্ছে তাতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। প্রথম পর্যায়ে ১০০০ কোটি টাকার একটি বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। শীঘ্রই বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা তা দেখতে আসবেন।
আর পণ্য পরিবহণের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, ‘উলুবেড়িয়া থেকে গার্ডেনরিচ পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকা খরচ করে গঙ্গায় ভেসেল পরিষেবা চালু করার চেষ্টা হচ্ছে। ভেসেলে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে যাওয়া হবে। ফলে, মুম্বই রোড বা কলকাতার রাস্তায় ট্রাকের চাপ অনেকটাই কমবে। এই টাকাও বিশ্বব্যাঙ্ক দেবে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
গাদিয়াড়ায় এ দিন যে বাসস্ট্যান্ডের শিলান্যাস হয়, তাতে বরাদ্দ হয়েছে ৪ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। তিনটি পর্যায়ে কাজটি হবে। প্রথম পর্যায়ের জন্য ১ কোটি ১১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শুভেন্দু এ দিন গাদিয়াড়া জেটিঘাটটিও পরিদর্শন করেন। নতুন জেটিঘাট এখানে বানানো হলেও তা ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরনো কংক্রিটের জেটিঘাট না-ভেঙে ফেলার দরুণ এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। শৌচাগারের কাজ অসম্পূর্ণ। জেটিঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তা বেহাল। কোনও আলো নেই।
পরিদর্শন চলাকালীন মন্ত্রী জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পুরনো কংক্রিটের জেটি ভেঙে ফেলা এবং প্রয়োজনে নতুন করে জেটিঘাট তৈরির নির্দেশ দেন। রাস্তা এবং আলোর জন্যেও পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে বলেন। দ্রুত শৌচাগারের কাজও শেষ করতে জোর দেন। জানুয়ারিতে গাদিয়াড়া থেকে কলকাতার মিলেনিয়াম পার্ক পর্যন্ত ১০০ আসনের একটি লঞ্চ পরিষেবা চালু করার কথাও ঘোষণা করেন শুভেন্দু। তিনি জানান, জানুয়ারি থেকেই ধর্মতলা-গাদিয়াড়া পর্যন্ত সরকারি বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।