কেবল ভুয়ো কলেজ খুলে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণাই করেননি তিনি। ‘হাওড়া সেন্ট্রাল কলকাতা মেডিকেল কলেজ’ নামে নিজের কলেজ থেকে ইসিজি টেকনিশিয়ানের জাল শংসাপত্র তৈরি করে সরকারি হাসপাতালে চাকরিও জুটিয়ে নিয়েছিলেন অমল খাটুয়া।
ওই শংসাপত্রের জোরেই প্রায় সতেরো বছর ধরে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে জাঁকিয়ে বসেছিলেন অমল। আপাতত তাঁর খোঁজ করছে পুলিশ।
বুধবার কলেজটি সিল করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার কাকদ্বীপ হাসপাতাল থেকে অমল সম্পর্কে যাবতীয় নথি ঘেঁটে বের করা হয়। জানা যায়, নিজেই নিজের কলেজ থেকে জাল শংসাপত্র বের করেছিলেন অমল।
ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্যজেলার সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ দিনই হাসপাতাল থেকে যাবতীয় নথিপত্র বের করা হয়েছে। সেগুলি ঘেঁটে দেখা হচ্ছে, কী কী গোলমাল রয়েছে।’’ যাবতীয় নথিপত্র স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য স্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রকল্প-২ শুরু হয়েছিল। তখনই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসকের দফতর থেকে ইসিজি টেকনিশিয়ান নিয়োগ করা হয়। সে সময়ে ‘হাওড়া সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজ’-এর শংসাপত্র জমা করেন অমলবাবু। তাঁর নিয়োগ হয় কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে। ২০০৭ সালে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে চাকরি পাকাও হয়। নিয়োগপত্রে সই রয়েছে তৎকালীন রাজ্যের যুগ্ম স্বাস্থ্য অধিকর্তার। প্রশ্ন উঠেছে স্থায়ীকরণের আগে অন্তত কেন নথিপত্র খতিয়ে দেখা হল না।
হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, খুব একটা মিশতেন না অমল। হাসপাতালে দেরিতে আসতেন। তাড়াতাড়ি বেরিয়েও যেতেন অনেক সময়ে। তা নিয়ে একাধিকবার অশান্তিও হয়েছে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিন্তু একমাত্র ইসিজি কর্মী বলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। টেকনিশিয়ানদের সংগঠনেও নাম লেখাননি অমল। তাঁর এক সহকর্মীর কথায়, ‘‘সংগঠনের সদস্য করা হবে বলে চাঁদা চাইতে গেলে আমাদের বলতেন, সংগঠন করে কী হবে, বিপদে পড়লে কি সংগঠন বাঁচাবে?’’