বিদ্যুৎ অনিয়মিত। হোটেলে বন্ধ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র। বিরক্ত হয়ে বকখালির সমুদ্র সৈকত থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন পর্যটকেরা।
বকখালিতে বিদ্যুতের সমস্যা নতুন নয়। বিদ্যুৎ থাকলেও বেশির ভাগ সময়ে লো ভোল্টেজ থাকে। হোটেলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র থাকলেও অনেক জায়গায় সেগুলি চলে না। ভরসা বলতে জেনারেটর। রাত বাড়লে সেই জেনারেটরও বন্ধ হয়ে যায়। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে সেটি আসতে পরের দিন দুপুর গড়িয়ে যায়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকখালি এবং হেনরি আইল্যান্ড পরিচিত ভ্রমণ কেন্দ্র| দিন কয়েকের জন্য ছুটি কাটাতে অনেকেই এই সমুদ্র সৈকতে চলে আসেন। কিন্তু বিদ্যুৎ অনিয়মিত না হওয়ায় মার খাচ্ছে পর্যটন ব্যবসা। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ দফতরে এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয় না।
পর্যটন বাড়াতে দিঘায় যখন পরিষেবার নানা দিক তৈরি করছে সরকার, তখন রাজ্যের আর এক সৈকত বকখালি অবহেলিতই থেকে যাচ্ছে বলে বার বার অভিযোগ উঠেছে। এখানে রাস্তাঘাট নিয়ে সমস্যা রয়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা সুগম নয়। বকখালির এক হোটেল মালিক জানালেন, ‘‘বড় জেনারেটর চালাতে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ লিটার তেল লাগে। ব্যবসায় লাভ হবে কী করে? প্রতি মাসে প্রায় ৫২ হাজার টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।’’ যে হোটেলে লিফট রয়েছে, সেখানে ঘাটতির পরিমাণ বেশি। বকখালি সংলগ্ন হেনরি আইল্যান্ডে ফিশারিজ কর্পোরেশনের গেস্ট হাউসেও বিদ্যুতের সমস্যা। দিন কয়েক আগে হাওড়ার কয়েকজন যুবক অগ্রিম বুকিং করে ওই গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন। কিন্তু সেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কাজ না করায় তাঁরা অন্য হোটেলে চলে যেতে বাধ্য হন। বকখালির হোটেল মালিকদের অভিযোগ, ৪৪০ বা ২২০ ভোল্টের কমার্শিয়াল সংযোগ নেওয়া সত্ত্বেও কোনও সময়েই ঠিকঠাক ভোল্টেজ থাকে না। রাতে আরও কমে যায়। জোর করে চালাতে গিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র খারাপ হয়। হোটেল মালিকদের একটি সংগঠনের নেতা অপূর্ব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রে এ ভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই পর্যটকেরা বকখালি থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন।’’ শুধু হোটেল মালিক এবং পর্যটক নয়, সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ফ্রেজারগঞ্জ মোড় থেকে বকখালি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত ২০০টি দোকান রয়েছে। অনেকে দোকানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র কিনেছেন।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বকখালিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় নামখানার সাব স্টেশন থেকে। কিন্তু ওই সাব স্টেশনের ক্ষমতার চেয়ে সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ অনেক বেশি। তাই বকখালিতে বিদ্যুতের সমস্যা মিটছে না। বিদ্যুৎ দফতরের কাকদ্বীপ মহকুমার ডিভিশনাল ম্যানেজার এই নিয়ে কিছু বলতে চাননি। এসএমএসের জবাব দেননি।