নষ্ট করা হচ্ছে বাজি। ছবি: শান্তনু হালদার।
লক্ষ্মীপুজো এলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাবরার বাসিন্দারা। কারণ, ওই দিন শব্দবাজির দাপটে কান পাতা দায় হয়। বারুদের গন্ধে ভরে যায় হাবরার পথঘাট। অসুস্থ হন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ পেয়ে গত বার থেকে শব্দবাজি বন্ধ করতে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। এ বছরও ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ধরপাকড়। চলছে প্রচার। বাজেয়াপ্ত হয়েছে শব্দবাজি।
দক্ষিণ হাবরার বাসিন্দা বালা বসু করের ক্ষোভ, ‘‘এর আগে এমনও হয়েছে, লক্ষ্মীপুজোর রাতে শব্দবাজির দাপটে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগত। চারিদিকে শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছিল।’’ একই অভিজ্ঞতা হাবরার অনেক বাসিন্দার।
একই ঘটনা ফের ঘটবে না তো?
হাবরা থানার পুলিশ অবশ্য ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার থেকে শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে শব্দবাজি বন্ধে অটো থেকে প্রচার শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে বনবনিয়া, বাণীপুর, আক্রমপুর-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১০০ কেজি শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
বছর দু’য়েক আগে পুলিশ প্রচুর শব্দবাজি আটক করে গাড়ি থেকে নামানোর সময়ে সেগুলি ফেটে গিয়েছিল। তাতে পুলিশ কর্মী ছাড়াও কয়েকজন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছিলেন। তারপর থেকে শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করার সময়ে দমকলকে সঙ্গে নেয় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এ বারও শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করার সময়ে পুলিশের সঙ্গে দমকলের কর্মী থাকছেন। এ ছাড়াও, সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরির জন্য হাবরা থানার আইসি মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (৯৭৩২৬১৯৬৮৭) মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে।
মৈনাকবাবু বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অনেকে আমাদের ফোন করে শব্দবাজি নিয়ে অভিযোগ করছেন। অভিযোগকারীর পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর রাতে সাধারণ মানুষ যাতে আশঙ্কা ছাড়াই পথে বেরোতে পারেন, সে জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ পুলিশের সঙ্গে হাবরা পুরসভাও শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হয়েছে। পুরপ্রধান নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘শুক্রবার ও শনিবার পুরসভার পক্ষ থেকেও মাইক প্রচার করা হবে। লক্ষ্মীপুজোয় শব্দবাজির দাপট গত বছর কম ছিল। এ বার আরও কমানোর চেষ্টা চলছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লক্ষ্মীপুজোর আগে আগে হাবরার শব্দবাজি এনে মজুত করা হয়। সেগুলিই গোপনে বিক্রি করা হয়। দক্ষিণ হাবরার বাসিন্দা গৃহবধূ পুষ্পিতা নন্দীর কথায়, ‘‘লক্ষ্মীপুজোর রাতে শব্দবাজি আমাদের কাছে ত্রাসের মতো। তবে পুলিশের উদ্যোগে এ বার আমরা ভরসা পাচ্ছি।’’