ডায়মন্ড হারবার জেটিঘাটে নানা অব্যবস্থা
diamond habour

দুই শিশুর মৃত্যুর পরে কি ফিরবে জেটির হাল, প্রশ্ন

ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবার থেকে বহু মানুষ পূর্ব মেদিনীপুরে নানা কাজে যাতায়াত করেন। দুই জেলার যোগাযোগ সড়কপথের তুলনায় নদীপথেই বেশি সহজ মনে করেন অনেকে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ০৯:২১
Share:

বেহাল: যাত্রী-ছাউনির সামনে এ ভাবে নেমেছে ধস। নিজস্ব চিত্র।

ডায়মন্ড হারবার জেটিঘাটে ভেসেলে ওঠার সময়ে বাবার হাত ফসকে পড়ে গিয়ে তলিয়ে যায় দুই বোন। পরে উদ্ধার হয় নিথর দেহ। অসতর্কতার অভিযোগ থাকলেও এই ঘটনার পরে ঘাটের পরিকাঠামোগত সমস্যার কথাও উঠে আসছে। যাত্রীদের অভিযোগ, সামান্য অসাবধান হলে যে কোনও মুহূর্তে এখানে ফের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

Advertisement

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার জেটিঘাটটি ১৯৮৩ সাল থেকে ডায়মন্ড হারবার পুরসভার অধীনে রয়েছে। হুগলি নদীর ওপারে এই জেটিঘাটের অন্য দিকে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কুকড়াহাটি জেটিঘাট। আগে ডায়মন্ড হারবার জেটিতে কংক্রিটের স্ল্যাব বেয়ে লঞ্চে ওঠানামা চলত। বছর পাঁচেক আগে পুরনো ঘাটের কাছে তৈরি হয়েছে পল্টুন বসানো জেটিঘাট। নতুন জেটিঘাট তৈরির পাশাপাশি বছর দু’য়েক আগে পরিবহণ দফতর থেকে নদীপথে চলাচলের জন্য চারটি ভেসেলও দেওয়া হয়েছে। দু’টি ভেসেল ও লঞ্চ নিয়ে যাত্রী পারাপার চলছে। দু’টি অকেজো।

ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবার থেকে বহু মানুষ পূর্ব মেদিনীপুরে নানা কাজে যাতায়াত করেন। দুই জেলার যোগাযোগ সড়কপথের তুলনায় নদীপথেই বেশি সহজ মনে করেন অনেকে। নদীপথে ডায়মন্ড হারবার জেটিঘাট থেকে কুকড়াহাটি জেটিঘাটের দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। লঞ্চ বা ভেসেলে পারাপার করতে সময় লাগে ৪০-৪৫ মিনিট।

Advertisement

বহু মানুষ পারাপার করলেও এই গুরুত্বপূর্ণ জেটিঘাটে উপযুক্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। বহু বছর আগে লাগানো ভেপার ল্যাম্পের টিমটিমে আলোই ভরসা। অথচ, রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত শেষ ভেসেল পূর্ব মেদিনীপুরে রওনা দেয়। ওই সময়ে ভেসেলে উঠতে বাড়তি সতর্ক থাকতে হয়। রবিবার সন্ধ্যায় দুই শিশু সিদ্রা তাসরিন ও আতিফা নাজরিনেরা যখন জেটিতে, তখন সেখানে আলো কম ছিল। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা।

ঘাটের সিসি ক্যামেরা বহুদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ঘাটের যাত্রীদের নিয়মিত সতর্ক করতে মাইকে প্রচারের ব্যবস্থা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মাইকটিও অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া, ডায়মন্ড হারবার জেটিঘাটে কোনও শৌচালয় বা পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। যাত্রীদের জন্য তৈরি করা ছাউনির সামনের স্ল্যাবে ধস নেমে গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি হলে দোকানের নীচে আশ্রয় নিতে হয় যাত্রীদের।

অনেকেরই অভিযোগ, হুগলি নদীতে ভেসেল দাঁড়ানো ঘাট থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে টিকিট কাউন্টার। কোনও যাত্রী একটু দেরিতে ঘাটে পৌঁছলে টিকিট কেটে ভেসেলে উঠতে সমস্যায় পড়তে হয়। সন্ধের পরে প্রায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভেসেলে ওঠানামা চলে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা খুবই বেশি।

এ বিষয়ে উপ পুরপ্রধান রাজর্ষি দাস বলেন, “জেটিঘাটের কিছু কাজ নতুন করে সংস্কার শুরু হয়েছে। পানীয় জলের বিষয়ে শীঘ্রই সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে সমাধান করা হবে। সিসি ক্যামেরা দ্রুত সারানোর ব্যবস্থা নেব। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা এড়াতে আরও কর্মী বাড়িয়ে নজরদারি চালানো হবে। জেটিঘাটে আলোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন