Diamond Harbour

কী গড়তে কী গড়েছিলাম, ডায়মন্ড হারবারে ক্ষমাপ্রার্থী শোভন

ব্যক্তিগত ভাবে তিনি কোনও দিন, কোনও চিট ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলেও দাবি করেন শোভন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ২০:৫৭
Share:

আমতলার সভায় বৈশাখী ও শোভন। নিজস্ব চিত্র

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের ভোটারদের কাছে ক্ষমা চাইলেন বিজেপি-র কলকাতা সাংগঠনিক জোনের নয়া পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায়। সোমবার আমতলায় ‘‘আজ এই সভায় আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি। লোকসভা ভোটে অভিষেকের হয়ে প্রচার করে তাঁকে জিতিয়েছি। কিন্তু কী গড়তে কী গড়েছিলাম আমি! তাই প্রায়শ্চিত্ত করতে পায়ে পা মিলিয়েছি।’’

Advertisement

ব্যক্তিগত ভাবে তিনি কোনও দিন, কোনও চিট ফান্ডের ((ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না বলেও দাবি করেন শোভন। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলার সভায় তিনি বলেন, , ‘‘আমাদের উপর অনেকেই বলেন, নারদের কথা সারদার কথা। যেনে রাখুন কোনও চিটফান্ডের (ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা) সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যুক্ত ছিলাম না। কিন্তু আজকে আমার সরকারটা কখনও সারদা, কখনও রোজভ্যালি কখনও অন্য কোনও চিটফান্ডের কাছে মাথা বিকিয়ে দেওয়ার জন্য আজকে তৃণমূল মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারে না।’’

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের অন্তর্গত মহেশতলা, বিষ্ণুপুর, আমতলায় বিজেপি-র এই কর্মসূচিতে শোভনের সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মিছিলেন পরে আমতলার কলোনি মাঠে হয় সভা। সেখানে অভিষেকের সাংসদও হওয়ার নেপথ্যে তাঁর ‘ভূমিকা’ কথাও জানান শোভন। দাবি করেন, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট ঘোষণার পরে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নবান্নের ১৪ তলায় ডেকে পাঠিয়ে অভিষেককে প্রার্থী করার কথা জানিয়ে জেতানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শোভনের দাবি, ‘‘সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত এই ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের প্রান্ত থেকে প্রান্ত মানুষের কাছে আবেদন করে, সংগঠিত করে সেদিন আমি সাংসদ নির্বাচিত করেছিলাম।’’

Advertisement

‘বহিরাগত’ বিতর্কে সরাসরি মমতাকে নিশানা করেন শোভন। তিনি বলেন, ‘‘১৯৮৪ সালে ভারতবর্ষের সংসদে আপনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। আপনি আজও গর্ব করে বলেন, ‘রাজীব গাঁধী বলেছিলেন, এই মেয়েটিকে দেখে রাখো। আপনি সার্টিফিকেট নেওয়ার সময় রাজীব গাঁধীর নাম করেন। তিনি কে? তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। আর নরেন্দ্র মোদী কে? ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী। রাজীব গাঁধী আপনার আপন ঘরের লোক আর নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা বহিরাগত!’’

মমতা তথা তৃণমূলের ‘বহিরাগত তত্ত্ব’কে সোমবার ‘ভয়ঙ্কর খেলা’ বলে চিহ্নিত করেন শোভন। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ভারতবর্ষের প্রতি ২৫ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে ভাষার পরিবর্তন হয়, ধর্মের পরিবর্তন হয়, বর্ণের পরিবর্তন হয়, বিভিন্ন সংস্কৃতির পরিবর্তন হয়। বহুবিধের মধ্যে আমাদের দেশের নাম ভারতবর্ষ।’’

‘‘ফেডেরাল (যুক্তরাষ্ট্রীয়) ব্যবস্থার কথা বার বার বলবেন। আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাঁড়িয়ে ভারতবর্ষের অর্থমন্ত্রীকে, ভারতবর্ষের গৃহমন্ত্রীকে (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), ভারতবর্ষের স্বীকৃত রাজনৈতিক দল যারা সরকার চালাচ্ছে, তাদের উপর আপনাদের গুন্ডাদের দিয়ে আক্রমণ শানাবেন, যেনে রাখুন সব সময় দিন এক যায় না।’’

শোভনের দাবি, মমতা যেদিন সিপিএমের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন সেদিন বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। তাঁর মতো যুবকেরা রুখে দাঁড়িয়ে সিপিএমকে রাইটার্স বিল্ডিং থেকে উৎখাত করেছিল। তাঁর ‘উপলব্ধি’, ‘‘আজ বুঝেছি, কেন আমরা কয়লা চুরির, গরু পাচারের, আমপানের টাকা চুরির, চাল চুরির, কাটমানির বদনাম নেব।’’

বৈশাখী এ দিন অভিষেকের নাম না করে বলেন, ‘‘কোনও এক যুবরাজের ডেরা বানিয়ে রেখেছে এই ডায়মন্ড হারবারকে। দুষ্কৃতীদের আসল আস্তানা বানিয়ে তুলেছে এই ডায়মন্ড হারবারকে। আজ দিন এসেছে বাংলাকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে হবে। সোনার বাংলা গড়তে হবে।’’ শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষাক্ষেত্রে যা যা দুর্নীতি হয়েছে, যদি অ্যাকাডেমিক অডিট হয় অনেক শিক্ষককে পালিয়ে যেতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন