৯০ মিমি-র কম ফাঁসের জাল ব্যবহারে ব্যবস্থা

আইনের ফাঁকই বাধা, বলছে মৎস্য দফতর

ছোট ইলিশ ধরার সেই বেআইনি জাল অবাধে বিক্রি হচ্ছে কাকদ্বীপ মহকুমার অসংখ্য দোকানে। ৯০ মিলিমিটারের কম ফাঁস যুক্ত ওই জাল আটকাতে প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৫০
Share:

ফাইল চিত্র।

ইলিশ ধরার মূল সরঞ্জাম জাল। কিন্তু সেই জাল নিয়েও মৎস্য দফতরের নানা নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কারণ ছোট ইলিশ। প্রতি বছর ছোট ইলিশ ধরা আটকাতে ৯০ মিলিমিটারের কম ফাঁসের জাল ব্যবহার নিয়ে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করে মৎস্য দফতর। কিন্তু তাতে যে তেমন কাজ হচ্ছে না তারই প্রমাণ মিলল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে।

Advertisement

অভিযোগ, ছোট ইলিশ ধরার সেই বেআইনি জাল অবাধে বিক্রি হচ্ছে কাকদ্বীপ মহকুমার অসংখ্য দোকানে। ৯০ মিলিমিটারের কম ফাঁস যুক্ত ওই জাল আটকাতে প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে।

মৎস্য দফতরের সহ অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎকুমার বাগ বলেন, ‘‘আমরা বেআইনি জালের বিষয়টি উপর মহলে জানিয়েছি। যাতে বাইরে থেকে ৯০ মিলিনিটারের কম ফাঁসের জালের আমদানি আটকানো যায়, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছি।’’ তিনি জানান, এ ব্যাপারে আরও কড়া বিধি আনার ব্যাপারে সুপারিশ করেছি। তবে এর জন্য কিছুটা সময় লাগবে।

Advertisement

রাজ্য মৎস্যশিকার আইনে ইলিশ সংরক্ষণে মৎস্যজীবীদের ৯০ মিলিমিটারের কম ফাঁসের জাল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, ছোট ইলিশ ধরার জন্য ৬৫-৭০ মিলিমিটারের ফাঁসের জালের চাহিদাই বেশি। বিভিন্ন মানের জাল ব্যবহার করেন মৎস্যজীবীরা। দোকান থেকে তা সরাসরি কেনা যায় না। অর্ডার দিলে তা আনিয়ে দেন দোকানদার। মহকুমা জুড়ে অন্তত সাড়ে তিনশো জালের দোকান রয়েছে বলে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর। যদিও জাল বিক্রেতাদের দাবি অন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাকদ্বীপের এক জাল বিক্রেতা বলেন, ‘‘আমরা জাল আনি, কিন্তু সব সময় তা মাছ ধরার জন্য ব্যবহার হয় না। পুকুরে বা জমির ফসল বাঁচাতে বেড়া দিতেও জাল ব্যবহার হয়।’’

দোকানে ছোট ইলিশ ধরার জন্য জাল বিক্রির খবর পেয়েও তাঁরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন?

মৎস্য দফতরের এক অফিসারের কথায়, ‘‘যতক্ষণ না জালটা মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারে পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ জালের দোকান আমাদের আওতায় পড়ে না।’’

কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্র বলেন, ‘‘৯০ মিলিমিটারের নীচে কোনও জাল বিক্রি হবে না, এরকম নিয়ম করলে যে মৎস্যজীবীরা ব্যোমলা মাছ বা লট্যে মাছ ধরে জীবিকা চালান তাঁরা বিপদে পড়বেন। কারণ ওই মাছ ৪০-৪৫ মিলিমিটার ফাঁসের জালেই ধরা পড়ে। কাকদ্বীপে এরকম মৎস্যজীবীর সংখ্যাও অনেক।’’ পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, ৪০-৪৫ মিলিমিটারের ফাঁসে ধরা ইলিশ এতটাই ছোট যে বাজারে বিক্রি করে পোষায় না।

তবে মৎস্যজীবীদের দাবি, জালের মাপ নিয়ে কড়াকড়ির পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে ট্রলিং বন্ধ করাও প্রয়োজন। কারণ ট্রলির জালের ফাঁস বড় হলেও ধরার পদ্ধতিতেই আটকে পড়ে ছোট ইলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রায় ৫০০টি ট্রলারকে ট্রলিং করার অনুমোদন দেওয়া রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন