টিটাগড়ে দুই ব্যবসায়ীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য

বিয়েবাড়ি যাওয়ার জন্য শুক্রবার বেরিয়েছিলেন দু’জনে। কেউই বাড়ি ফেরেননি। পরের তিন দিনেও তাঁদের কোনও খোঁজ মেলেনি। শেষমেশ সোমবার, চতুর্থ দিনে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে ঝিলের ধারে মিলল দু’জনের দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

বিয়েবাড়ি যাওয়ার জন্য শুক্রবার বেরিয়েছিলেন দু’জনে। কেউই বাড়ি ফেরেননি। পরের তিন দিনেও তাঁদের কোনও খোঁজ মেলেনি। শেষমেশ সোমবার, চতুর্থ দিনে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে ঝিলের ধারে মিলল দু’জনের দেহ।

Advertisement

পুলিশের ধারণা, টিটাগড়ের বাসিন্দা ওই দুই যুবককে খুন করা হয়েছে। এ দিন ঘোলা থানার সদরহাট এলাকা থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাটি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। মৃতদের নাম মহম্মদ সালাউদ্দিন (৩২) ও প্রকাশ সাউ (২৮)।

পুলিশ সূত্রের খবর, সালাউদ্দিন এবং প্রকাশ একসঙ্গে ব্যবসা করতেন। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই খুন হয়ে থাকতে পারেন তাঁরা। কিন্তু কেন এই ঘটনা, সে বিষয়ে পরিবারের লোকেরা তদন্তকারীদের কিছুই বলতে পারেননি। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি। মৃতদের পরিজনেরা জানিয়েছেন, রাতের দিকে তাঁরা অভিযোগ করবেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সালাউদ্দিন টিটাগড় বাজার এলাকার বাসিন্দা। প্রকাশের বাড়ি টিটাগড়েরই ছোট গাঁধী মোড়ে। কয়েক বছর ধরে তাঁরা একসঙ্গে গরু-ছাগলের ব্যবসা করতেন। হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন হাট থেকে গরু কিনে তা সরবরাহ করতেন। সালাউদ্দিনের স্ত্রী মুসকান বানু জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে তাঁর স্বামী বাড়িতেই ছিলেন। তখন এক পরিচিতের ফোন আসে তাঁর কাছে। সালাউদ্দিনকে বলা হয়, এক বন্ধুর বিয়ের পার্টি আছে। তিনি যেন প্রকাশকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যোগ দেন। বাড়িতেও সে কথাই জানিয়ে যান দু’জন।

কিন্তু রাত পর্যন্ত সালাউদ্দিন না ফেরায় খুঁজতে বেরোন বাড়ির লোকেরা। যে বন্ধু তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তিনি জানান, তাঁর বাড়িতে সালাউদ্দিনেরা আসেননি। এমনকি তিনি তাঁদের ডেকে পাঠানোর কথাও অস্বীকার করেন। প্রকাশের বাড়িতেও সন্ধান মেলেনি কারও। সারা রাত সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও সালাউদ্দিন বা প্রকাশের সন্ধান মেলেনি। শনিবার টিটাগড় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন দুই পরিবারের লোকেরা।

ঘোলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সকালে স্থানীয় সূত্রে খবর আসে, সদরহাটে কেবরি বিলের ধারে দু’টি দেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। বিভিন্ন থানায় খোঁজখবর করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, টিটাগড় থানায় দু’জনের নামে নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। এর পরেই সালাউদ্দিন ও প্রকাশের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। বাড়ির লোক গিয়ে দু’জনের দেহ শনাক্ত করেন।

পুলিশ জানায়, দেহ দু’টিতে পচন ধরেছিল। তাঁদের অনুমান, দিন দু’য়েক আগে অন্য কোথাও খুন করে দেহ দু’টি ঝিলের ধারে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

সালাউদ্দিনের বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। তাঁদের বয়স ছয় থেকে বারো বছরের মধ্যে। প্রকাশ অবিবাহিত। গরু-ছাগল কেনার জন্য ওই দু’জন বেশির ভাগ দিন হুগলির পান্ডুয়ায় যেতেন। একসঙ্গে দু’জনের মৃত্যু হওয়ায় বিভ্রান্ত পুলিশও। তারা জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন