বেআইনি পার্কিং ও বাণিজ্য নিয়ে বৈঠক

ট্রাক সরাতে হবে, সিদ্ধান্ত প্রশাসনের

রবিবার এ দেশের একটি প্রতিনিধি দল বেনাপোলে গিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করেন। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে আগামী তিন দিনে তাঁরা যেন প্রতিদিন ৭০০ করে ট্রাক নেন। সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share:

দখল: সরু হয়ে গিয়েছে রাস্তা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বনগাঁ-চাকদহ রাজ্য সড়ক থেকে বেআইনি ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক দ্রুত সরানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন।

Advertisement

শনিবার জেলাশাসকের অফিসে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর, জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, বনগাঁ পুরসভার ট্রাক পার্কিং, পেট্রাপোলে সেন্ট্রাল ট্রাক টার্মিনাস ও বনগাঁ- চাকদহ সড়ক মিলিয়ে সাড়ে ৫ হাজার ট্রাক রয়েছে। ওই সব পণ্যভর্তি ট্রাক দ্রুত বাংলাদেশে যাতে পাঠানো যায় তার জন্য পদক্ষেপ করা হয়েছে। ১০ সদস্যের একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে যতটা সম্ভব ট্রাক বেনাপোলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

রবিবার এ দেশের একটি প্রতিনিধি দল বেনাপোলে গিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করেন। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে আগামী তিন দিনে তাঁরা যেন প্রতিদিন ৭০০ করে ট্রাক নেন। সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।’’

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখন রাস্তার পাশে শ’খানেক ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। এ ভাবে ওই সড়কে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বনগাঁ শহর থেকে ওই সড়ক ধরে গোপালনগরের দিকে গেলে মনে হবে রাস্তাটি ট্রাক পার্কিংয়ের জায়গা। বাসিন্দাদের কথায়, ‘‘এতদিন সড়কের একপাশে রাস্তার পাশে ট্রাক দাঁড়াত। কিন্তু দিন কুড়ি হল পণ্যবাহী ট্রাক রাস্তার উপর এসে দাঁড়াচ্ছে।’’ গোপালনগর থানার পুলিশের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ট্রাক চালক ও মালিকদের জন্যে মাইকে প্রচার শুরু করা হয়েছে। বলা হয়েছে সড়কের দু’পাশে ট্রাক না দাঁড় করানোর জন্য।

১ অগস্ট পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা পণ্য আমদানি রফতানির কাজ শুরু হয়েছে। তারপর থেকেই রাস্তার উপর ট্রাক দাঁড়ানো বেড়েছে।

পুলিশ ও বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্যের কাজ শুরু হলেও বাস্তবে পণ্য আমদানি রফতানি তেমন বাড়েনি। পেট্রাপোল এক্সপোটার্স অ্যাণ্ড ইমপোটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য চালু হওয়ার একমাস পরে দেখা যাচ্ছে গড়ে রোজ ২৪ ট্রাক বাণিজ্য বেড়েছে। এতে লাভ কিছুই হচ্ছে না।’’ ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য শুরু হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পণ্যবাহী ট্রাক আরও বেশি পেট্রাপোল সীমান্তের দিকে আসছে।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুজোর আগে প্রতি বছরই বাণিজ্যের চাপ বাড়ে। তা ছাড়া এখন বাংলাদেশে চালের চাহিদা বেড়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা বেশি করে চাল রফতানি করছেন।’’ ২৪ ঘণ্টা বাণিজ্য চালু হওয়ার পর দেশের অন্য বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসছেন বাণিজ্য করতে। সব মিলিয়ে ট্রাকের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান। পণ্যভর্তি ট্রাক বেশি আসছে। কিন্তু বাণিজ্য বাড়ছে না। কার্তিকবাবু বলেন, ‘‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার জন্যেও বাণিজ্য বাড়ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন