প্রতীকী ছবি।
রক্তসঙ্কট দূর করতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করলেন হাসনাবাদ-শিয়ালদহ শাখার কিছু নিত্যযাত্রী। ১৫ অগস্ট শিবির করা হয়। সেখানে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত দুই ছাত্রী-সহ তিনজনের জন্য রক্ত দেন ৩৮ জন। বসিরহাটের চৌমাথার একটি হলে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসিরহাটের এসডিপিও শ্যামল সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘ট্রেন যাত্রীদের প্রত্যেককেই এই সমাজসেবামূলক কাজগুলি ধরে রাখতে হবে।’’
এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাক্তন ফুটবলার মিহির বসু বলেন, ‘‘অফিসের পরিশ্রমের পর ট্রেনের যাত্রীদের এই যে একত্রিত হওয়া মনোভাব তা আমাকে মুগ্ধ করে। অনেকের ডাক উপেক্ষা করে বসিরহাটে আসা।’’ গত কয়েক বছর আগে হাসনাবাদ-বারাসত শাখার ৪ নম্বর বগির যাত্রীরা এই সংগঠন তৈরি করেন। সংস্থার নাম দেওয়া হয় ‘হাসনাবাদ-শিয়ালদহ নিত্যযাত্রী সংস্থা।’ এই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনে যাতায়াত করতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে খালি ঝগড়া, মারপিট অশান্তি লেগে থাকত। তা থেকে বাঁচতেই এই দল গঠন করা হয়।
সংস্থার সম্পাদক বাপি ভট্টাচার্য জানান, কখনও চড়ুইভাতির আয়োজন করা হয় তো কখনও পড়ুয়াদের নানারকমের প্রতিযোগিতা। দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের কয়েকবার বই-খাতাও কিনে দেওয়া হয়েছে। যাত্রীরা বা তাঁদের পরিবারের কেউ বিপদে পড়লে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোও এই সংগঠনের একটি অন্যতম কাজ। সংস্থার সভাপতি প্রভাতকুমার দে বলেন, ‘‘এখন আর অশান্তি নেই। কোথায় যাব, কী করব তা ঠিক করতেই ব্যস্ত যাত্রীরা। ট্রেনে উঠলে এ ওকে জায়গাও ছেড়ে দেন।’’
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বসিরহাটের নৈহাটির বাসিন্দা দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মৌবনী সরকার, পিঁফার সানিয়া পারভিন এবং ষষ্ঠী বটতলার বছর পঁয়ত্রিশের অলোক চট্টোপাধ্যায়েরা এসেছিলেন শিবিরে। তাঁদের কথায়, ‘‘বেঁচে থাকতে গেলে রক্ত এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। যাত্রীদের এই ব্যবস্থায় আমরা খুবই উপকৃত হব।’’