সুরজ মজুমদার
হাসপাতালে শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর হল নৈহাটিতে। পুলিশ ও পুরকর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা ফের হামলার ভয়ে দিনভর আতঙ্কে কাটান।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ হালিশহর শান্তিনগর কলোনির বাসিন্দা পেশায় ঢালাই মিস্ত্রি সুজল মজুমদার তাঁর আড়াই বছরের ছেলে সুরজকে নিয়ে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান। জরুরি বিভাগে তখন কোনও চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ। সুরজের মা রীতা বলেন, ‘‘ছেলের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। কোলে করে গোটা হাসপাতালে চিকিৎসকের খোঁজে ছুটে বেড়াই। তারপরে একজন এলেন। সব শুনে দু’টো ইঞ্জেকশন দিলেন। কিন্তু ছেলেটা আস্তে আস্তে অসাড় হয়ে গেল।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সুরজ মারা যায়। তারপরেই উত্তেজিত জনতা চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায় হাসপাতালে। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা ভয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন। জরুরি বিভাগ ও হাসপাতালের কয়েকটি ঘর তছনছ করা হয়। সুপারের ঘরে গিয়েও চেয়ার-টেবিল উল্টে দেয় মারমুখী জনতা। সন্তান হারানোর শোক আর রাগে নৈহাটি হাসপাতালের সুপারের উপরে চড়াও হন রীতাদেবী ও তাঁর স্বামীও। প্লাস্টিকের চেয়ার তুলে মারতে যান হাসপাতালের সুপার অনুভা কয়ালকে।
অনুভাদেবী বলেন, ‘‘আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, কিন্তু শিশুটির অবস্থা সঙ্গীন ছিল। দু’দিন আগে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু তারপরে বাড়ির লোকজন বন্ড সই করে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। শুক্রবার একদম শেষ অবস্থায় ফের আনেন হাসপাতালে।’’
সূরজের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, নিউমোনিয়া হয়েছিল তার। বুধবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলায় তাকে বাড়ি নিয়ে যান বাবা-মা।
এ দিকে, শুক্রবার ভোর থেকে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হয় শিশুটির। পাড়ার চিকিৎসক জানান, বুকে কফ জমে আছে। ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি রীতাদেবীর একমাত্র ছেলেকে।