‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকারে ঘুম ভাঙল

তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। হঠাৎ এক মহিলার ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার। পড়শিদের আচমকা ঘুম ভাঙল। দেখা গেল, এক মহিলা দাউ দাউ করে জ্বলছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

অশোকনগর শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৩
Share:

তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। হঠাৎ এক মহিলার ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার। পড়শিদের আচমকা ঘুম ভাঙল। দেখা গেল, এক মহিলা দাউ দাউ করে জ্বলছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মারা গিয়েছেন বধূ।

Advertisement

বুধবার ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগরের বাঁশপুল গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, চম্পা মোড়ল (৩২) নামে ওই মহিলার মা সীতা সর্দার থানায় স্থানীয় তিনজনের নামে কেরোসিন তেল ঢেলে মেয়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। চম্পাদেবীও মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে ওই একই কথা পুলিশ ও চিকিৎসকদের বলেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, শম্ভু, কার্তিক এবং অষ্টবালা মোড়ল নামে ওই তিনজনকে ওই দিন রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁশপুল পঞ্চায়েতের পাড়ুইপাড়ার বাসিন্দা চম্পাদেবী বিবাহিত। সন্তানও রয়েছে। বাড়ির পাশের যুবক শম্ভুর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। মাসখানেক আগে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে শম্ভুর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। তাঁরা বিয়েও করেছেন বলে দাবি।

Advertisement

ওই খবর পেয়ে চম্পাদেবীর প্রথম পক্ষের শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে যান। কিন্তু চম্পাদেবী রাজি হননি। পরে শম্ভুর বাবা কার্তিক ও মা অষ্টবালা চম্পাকে বাড়িতে আনে। অভিযোগ, সেখানে গিয়ে শুরু হয় নির্যাতন। গ্রামে এ নিয়ে সালিশি বসিয়েও সমাধান হয়নি।

সাংসারিক অশান্তির জেরেই চম্পার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রথমে এলাকার মানুষ তাঁকে স্থানীয় অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। সেখানেই মারা যান ওই বধূ। পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

চম্পার এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘সুখে থাকতে চেয়ে প্রথম সংসার ছেড়েছিল, কিন্তু এমন পরিণতি হবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারেনি চম্পা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন