ডেঙ্গিতে মৃত্যু নৈহাটির যুবকের

গত সপ্তাহে জ্বর আসে কৃষ্ণগোপালের। জামাইবাবু নিরুপম সাহা বলেন, ‘‘শুক্রবার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ায় তিনি রক্ত পরীক্ষা করতে দেন। শনিবার রক্তের রিপোর্টে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। সে দিনই নৈহাটি হাসপাতালে ভর্তি করি। তিন দিন সেখানেই ভর্তি ছিল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নৈহাটি শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩০
Share:

জঞ্জাল: শ্যামনগরের অন্নপূর্ণা মঠ এলাকায় পড়ে আবর্জনা। এখানেই ডিম পাড়ে মশা। ইনসেটে, কৃষ্ণগোপাল। — নিজস্ব চিত্র

চলতি বছরে উত্তর ২৪ পরগনার নানা প্রান্তে ডেঙ্গিতে প্রাণ গিয়েছে অনেকের। এ বার মৃত্যু হল নৈহাটিতে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যান হাজিনগরের বাসিন্দা কৃষ্ণগোপাল অধিকারী (২৫)।

Advertisement

গত সপ্তাহে জ্বর আসে কৃষ্ণগোপালের। জামাইবাবু নিরুপম সাহা বলেন, ‘‘শুক্রবার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ায় তিনি রক্ত পরীক্ষা করতে দেন। শনিবার রক্তের রিপোর্টে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। সে দিনই নৈহাটি হাসপাতালে ভর্তি করি। তিন দিন সেখানেই ভর্তি ছিল।’’ নিরুপম জানান, সোমবার নৈহাটি হাসপাতাল থেকে ফোন করে তাঁদের জানানো হয়, কৃষ্ণগোপালের অবস্থা ভাল নয়। তাঁকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে পাঠানো হবে। সোমবার কল্যাণী নিয়ে যাওয়ার পরে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল থেকে অবস্থার অবনতি হয়। মঙ্গলবার প্লেটলেট চার হাজারে নেমে যায়। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে।

কৃষ্ণগোপালের পরিবার দীর্ঘ দিন নৈহাটি শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন। সম্প্রতি ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজিনগর গরুর ফাঁড়ি এলাকায় ভাড়া বাড়িতে উঠে আসেন। ওই যুবক পেশায় মেকআপ শিল্পী ছিলেন। সম্প্রতি সৌদি আরবের একটি সংস্থায় চাকরি পেয়েছিলেন। পাসপোর্টও করা হয়ে গিয়েছিল। ভিনদেশে যাওয়ার আগে নানা কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তারই মধ্যে এই ঘটনা।

Advertisement

নৈহাটির বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে বলে পুরসভায় খবর আসছে। ভরা হেমন্তে এ ভাবে ডেঙ্গি ছড়ানোয় চিন্তিত চিকিৎসকেরা। কৃষ্ণগোপালের মৃত্যু আতঙ্ক ছড়িয়েছে নৈহাটির বিভিন্ন এলাকায়। পুরসভা জানিয়েছে, ডেঙ্গি ঠেকাতে তারা সাধ্যমতো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ডেঙ্গি আরও ছড়াবে। পুরসভাগুলিকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে হবে। মানুষের সহযোগিতাও প্রয়োজন।

হাজিনগরের যে এলাকায় থাকতেন কৃষ্ণগোপাল, সেখানে আরও চার জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। দিন দু’য়েক আগেই হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। বর্তমানে এই এলাকারই আরও দু’জন জেএনএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নৈহাটির ২ নম্বর ওয়ার্ডের দুই যুবকও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। নৈহাটির পাশাপাশি ভাটপাড়া, হালিশহর, কাঁচরাপাড়া পুর এলাকাতেও ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরসভায় চার মাস প্রশাসক ছিল। সে সময়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কেমন কাজ হয়েছে আমরা জানি না। ১৬ অক্টোবর আমরা নতুন করে বোর্ড গড়ে ফের কাজ শুরু করেছি। আপ্রাণ চেষ্টা করছি, যাতে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। সেই কাজ করতে গিয়ে নানা অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে। আশা করছি, দিন কয়েকের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন