শোকার্ত: অভিজিত সরকারের (ইনসেটে) বাবা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক বাইক আরোহীর। বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গোপালনগর থানার পানপাড়া এলাকার আকাইপুর-সহিষপুর সড়কে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম, অভিজিৎ সরকার (২১)। বাড়ি স্থানীয় পানপাড়া এলাকায়। বাইক চালক ও ও পিছনে বসা যুবকের মাথায় হেলমেট ছিল না।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ স্থানীয় যুবক অনিরুদ্ধ মাঝির সঙ্গে পথে দেখা হয় অভিজিতের। অনিরুদ্ধ তাঁকে বাইকের পিছনে তুলে নেন। অভিযোগ, বেপরোয়া গতিতে বাইক চালানোর সময়ে একটি কাঠ-বোঝাই ইঞ্জিন ভ্যান সামনে চলে আসে। অনিরুদ্ধ ব্রেক কষতেই পিছনে বসা অভিজিৎ ছিটকে পড়েন রাস্তায়। মাথায় চোট পান। ইঞ্জিন ভ্যানের পিছনের চাকা অভিজিতের শরীরের উপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয় মানুষজন জানালেন, আকাইপুর–সহিষপুরের রাস্তায় বাইক চালক ও আরোহীরা বেশির ভাগই হেলমেট পরে বাইক চালান না। হেলমেট ছাড়া এক বাইকে তিনজন, এমনকী চারজনও যান।
কিন্তু হেলমেট পরছেন না কেন?
এক যুবকের কথায়, ‘‘গ্রামের মধ্যে বাইক চালাচ্ছি, তাই পরিনি।’’ কারও জবাব, ‘‘এখানে তো পুলিশ কাউকে ধরে না।’’ হেলমেট ব্যবহার নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বনগাঁ মহকুমায় লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে। তাতে হেলমেট পরে বাইক চালানোর সংখ্যা কিছু বেড়েছে। কিন্তু হেলমেট যে নিজেদের নিরাপত্তার কারণে পরা উচিত— তা এখনও অনেকে বুঝতে চাইছেন না বলে মত পুলিশের।
বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় বলেন, ‘‘বাইক চালক ও আরোহীদের মধ্যে হেলমেট পরা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত প্রচার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে চলছে ধরপাকড়। তারপরেও মানুষ সচেতন না হওয়াটা দুভার্গ্যজনক।’’
অভিজিৎ স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। পাশাপাশি খেত মজুরের কাজও করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গেল, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত মাঠে কাজ করেছিলেন। এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। তাঁর জেঠিমা মৃন্ময়ী সরকার বলেন, ‘‘ও বাইকে উঠতে বা চালাতে চাইত না। আমাদের বাইক ছিল। ওকে শিখতে বলেছিলাম। ও রাজি হয়নি। আর শেষে কিনা বাইকে চড়তে গিয়েই মরতে হল।’’