“হেড অফিস থেকে ফোন করছি, আপনার কার্ড লক হয়ে গিয়েছে” এমনই ফোন কলে এটিএম কার্ডের গোপন নম্বর জেনে গ্রাহকের জমানো বেশ কয়েক হাজার টাকা তুলে নিল দুষ্কৃতীরা।
ঘটনায় প্রতারিত বাদুড়িয়ার বাজিতপুরের ফতুল্যপুর গ্রামের বাসিন্দা মামুল হাসান গাজি এই মর্মে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কথার ছলে এটিএম কার্ডের গোপন নম্বর জেনে গ্রাহকের জমানো টাকা তুলে নেওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন করতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পক্ষে সংশ্লিষ্ট শাখার সামনে গোপন নম্বর কাউকে না জানানোর জন্য লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও দুষ্কৃতীদের চালাকির শিকার হয়ে গ্রাহকেরা কার্ডের নম্বর বলে দিলে তারা অবলীলায় এ ধরনের জোচ্চুরি চালিয়ে যাচ্ছে।
মামুল হাসান জানান, তিনি বিএড পরীক্ষার খরচ জোগাড় করতে টাকা জমাচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, “গত রবিবার সকালে আমার মোবাইলে একটা ফোন আসে। অন্য প্রান্ত থেকে বলা হয়, কলকাতার হেড অফিস থেকে বলছি। আপনার এটিএম কার্ড লক হয়ে গিয়েছে। লক ছাড়াতে গোপন নম্বর জরুরি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ফোনের ও পার থেকে অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য ভঙ্গিতে মামুলের নাম, ঠিকানা, ব্যাঙ্কের পাশবইয়ের নম্বর, এমনকী এটিএম কার্ডের উপরে লেখা নম্বরও বলে দেওয়ায় তিনি কার্ডের গোপন নম্বরটি বলে দেন।
একটু পরেই লক্ষ করেন, তাঁর মোবাইলে, এটিএম থেকে একের পর এক টাকা তুলে নেওয়ার মেসেজ আসছে। বিপদ বুঝে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কের শাখা আধিকারিককে সব জানিয়ে এটিএম লক করার আগেই দুষ্কৃতীরা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে ৪৩ হাজার টাকা তুলে নেয়। খবর নিয়ে মামুল জানতে পারেন, নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে মুম্বই থেকে তাঁর টাকা তোলা হয়েছে। মাথায় হাত পড়ে তাঁর। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
মামুল বলেন, “চাকরির আশায় বিএড পড়ার খরচ জোগাড় করতে গৃহশিক্ষকতা করে ব্যাঙ্কে টাকা জমাচ্ছিলাম। দুষ্কৃতীদের পরিকল্পিত কথার জালে ফেঁসে গিয়ে সর্বস্ব খোওয়ালাম। পুলিশ এবং ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে কেবলমাত্র দুষ্কৃতী গ্রেফতার করলেই হবে না। এমন ভাবে মানুষের সামনে প্রতারকদের চক্রান্তের কথা তুলে ধরতে হবে, যাতে আর কেউ এমন ভাবে ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব না হারান।”