সে-দিন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে মঙ্গলবারেই দেখা করেছিলেন মোর্চার গুরুঙ্গপন্থী নেতারা। তাঁদেরই তিন জন তিলক রোকা, পি টি ওলা এবং ডি কে প্রধানকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। পলাতক রোশন গিরি। নিজস্ব চিত্র
মঙ্গলবার ওঁরা গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করতে। তার তিন দিনের মাথায় আজ গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬ থেকে মোর্চার সেই প্রতিনিধিদলের তিন জনকে পাকড়াও করল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সিআইডি। ৯ জুন ভানু ভবনে গোলমালের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল তাঁদের। শেষ মুহূর্তে কোনওক্রমে পালালেন প্রতিনিধিদলের নেতা তথা বিমল গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ রোশন গিরি।
সিআইডি সূত্রে খবর, ধৃতদের ট্র্যানজিট রিম্যান্ডে রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছে তারা। শিলিগুড়ির আদালতেই তোলা হতে পারে ধৃত ডি কে প্রধান, পি টি ওলা এবং তিলক রোকাকে। ডি কে প্রধান দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান, ওলা জিটিএ-র প্রাক্তন সদস্য এবং রোকা প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা। ধৃতদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাধানো, সরকারি কাজে বাধাদান, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনায় রাজ্য প্রথম থেকেই তাদের ক্ষোভ জানিয়েছিল। রাজ্যের বক্তব্য, রোশন-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। রোশনের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস রয়েছে। তাঁদের সঙ্গে রাজনাথ দেখা করেন কী ভাবে? রাজ্য প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, রোশনরা দিল্লিতে কোথায় রয়েছেন, তা শুরু থেকেই জানতেন গোয়েন্দারা। কিন্তু গ্রেফতার না করে কেবল নজর রাখা হচ্ছিল। মঙ্গলবার রাজনাথ-মোর্চা নেতাদের বৈঠকের পরেই কেন্দ্রকে পাল্টা বার্তা দিতে ওই নেতাদের গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেন প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: বিজেপি-সঙ্গ, দলের কড়া নজরে মুকুল
তবে এ দিনের অভিযান হরিয়ানা পুলিশকে জানিয়েই করা হয়েছে বলে দিল্লি সূত্রে খবর। কেন্দ্রের বক্তব্য, অভিযুক্তদের ধরতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সাহায্য চাইলে হরিয়ানা পুলিশ যে পাশে দাঁড়াবে, সেটাই স্বাভাবিক।
মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছেন। এক অডিও-বার্তায় তিনি জানান, রাজ্যের সঙ্গে পাহাড়েরও কয়েক জন এই ‘ষড়যন্ত্রে’ রয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা পাহাড় সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের গ্রেফতার করায় আমি স্তম্ভিত।’’
কী ভাবে তিন জনকে ধরল সিআইডি? গোয়েন্দা সূত্রের খবর, রোশনরা গুরুগ্রামের একটি হোটেলে ছিলেন। হোটেলটি বকলমে গুরুঙ্গের। হোটেলটির উপরে নজর রাখছিলেন সিআইডি অফিসারেরা। সব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরেই কলকাতা থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা আনানো হয়।