ঘুমের মধ্যেই লরি চাপা পড়ে মৃত্যু ৫ জনের, রণক্ষেত্র গলসি

লরি উল্টে যাওয়ার আওয়াজে জেগে ওঠেন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা পাকড়াও করেন অভিযুক্ত চালককে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মত্ত ছিলেন ওই চালক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:২৭
Share:

বছরের শুরুতেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা গলসিতে। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া

১৩ ঘণ্টা পরে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে বালি বোঝাই লরি উল্টে মৃত ৫ জনের দেহ উদ্ধার করতে পারল পুলিশ। বুধবার ভোর থেকেই ওই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা দফায় দফায় বালির খাদানের অফিসে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় মাটি কাটার জেসিবি মেশিনও। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশের সঙ্গে।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার গভীর রাতে গলসি থানা এলাকার শিকারপুরে। দামোদরের তীরে শিকারপুর গ্রাম। গ্রামেরই এক প্রান্তে বালির খাদান। সেখান থেকে বালি বোঝাই করে লরি গ্রামের রাস্তা দিয়েই যায়। মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ এ রকমই একটি লরি বালি বোঝাই করে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় রাস্তার পাশের একটি কাঁচা বাড়ির উপর। ঘুমের মধ্যেই প্রাণ হারান বাপি মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী দোলন, দুই শিশু সন্তান আবির-নন্দিনী এবং বাপির মা সুচিত্রা।

লরি উল্টে যাওয়ার আওয়াজে জেগে ওঠেন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা পাকড়াও করেন অভিযুক্ত চালককে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মত্ত ছিলেন ওই চালক। ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। ক্ষিপ্ত জনতা বালির খাদানের অফিস ঘর ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু জনগণের ক্ষোভের সামনে কার্যত অসহায় হয়ে যান সংখ্যায় অল্প পুলিশ কর্মীরা। এর মধ্যেই উত্তেজিত জনতা জ্বালিয়ে দেন খাদানের সামনে থাকা মাটি কাটার জেসিবি মেশিনে।

Advertisement

পুলিশ মৃতদের দেহ তুলতে এলে তাঁরা অবরোধ করেন। গ্রামের ভিতর পুলিশের গাড়ি এবং পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেন মানুষ। পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে অতিরিক্ত বাহিনী এসে পৌঁছয়। কিন্তু দফায় দফায় সংঘর্ষের পরও পুলিশ দেহ তুলতে ব্যর্থ হয়। শেষে বেলা আড়াইটে নাগাদ বিক্ষোভকারীদের উপর এলোপাথাড়ি লাঠি চার্জ করে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গোটা ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে নবান্ন থেকে। সূত্রের খবর, ওই খাদানের বৈধ নথি নেই। তার পরও কী ভাবে ওই খাদান চলছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন