প্রতীকী ছবি।
সাপে ছোবল দেওয়ার পর অসুস্থ ছেলের চিকিৎসায় ওঝা ডেকেছিলেন বাবা। চার ঘণ্টা পরে ওঝার কেরামতি শেষ হলে ন’বছরের বালকটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে তত ক্ষণে আর কিছু করার ছিল না। মারা যায় সে। বুধবারের ঘটনা। আগের দিন ওই হাসপাতালেই সাপে কাটা এক কিশোরকে ভর্তি করা হয়। তাকেও প্রথমে ওঝা দেখিয়ে দু’ঘণ্টা পরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তার অবস্থা সঙ্কটজনক।
প্রথমটি রূপাহারের বেলুলের ঘটনা। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উপেন দেবশর্মা ও তাঁর ছেলে দেবা বাড়িতেই ঘুমোচ্ছিলেন। উপেন বলেন, ‘‘হাতের উপর দিয়ে ঠান্ডা কী যেন সরে যাচ্ছিল। আলো জ্বেলে দেখি, সাপ। দু’জনে মশারি দিয়ে সাপটাকে ধরেও ফেলি।’’ তখন ভোর ৩টে। তিনি জানান, প্রথমে ভেবেছিলেন তাঁকেই সাপ কামড়েছে। কিন্তু দেবা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক প্রতিবেশীর বাইকে চেপে ছেলেকে ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখান থেকে সাড়ে ৬টায় বাড়ি ফিরে দেবা জানায়, চোখে দেখতে পাচ্ছে না। ৭টার পরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৫ মিনিট পরেই মারা যায় দেবা। সাপটি নিয়ে যায় একটি পশুপ্রেমী সংস্থা। সংস্থার এক কর্তা জানান, বিষাক্ত কালাচ সাপ ছোবল দিলেও বোঝা যায় না। সাপটিকে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ।
ওঝার কাছ থেকে ঘুরে মঙ্গলবার বিকেলে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয় বাহিনের শিয়ালতোড়ের বাসিন্দা ১৪ বছরের রুবেল আখতারকে। তার বাবা জানায়, দুপুরে বাড়ির পাশেই বিষাক্ত সাপে কামড়ায় তাকে। আপাতত ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে সঙ্কটজনক অবস্থায় ভর্তি সে।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের উত্তর দিনাজপুর শাখার যুগ্ম সম্পাদক বিপুল মৈত্র বলেন, ‘‘সাপে কাটার ওষুধ প্রতিটি জেলা হাসপাতালে রয়েছে। প্রচারও চলছে দীর্ঘদিন। আজও মানুষ কেন ওঝার কাছে যান, বুঝি না। গ্রামের স্কুলগুলিতেও প্রচার চলছে।’’