Medical Negligence

Justice: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, বিচারের আশায় চরকিপাক খাচ্ছেন খোদ বিচারক

বাবার মৃত্যুতে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিচারক রাজীব সিংহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১৯
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বছরের পর বছর মামলা চলতে থাকায় জুতোর সুখতলা ক্ষয়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে পকেটের জোর— সাধারণ বঙ্গবাসীর এই অভিজ্ঞতা নতুন নয়। তবে বিচারের দীর্ঘসূত্রতা যে খোদ বিচারককেও ছেড়ে কথা বলছে না, সেটা বিরল ঘটনা। এ বার সেই বিরল ঘটনাই সামনে এল। জানা গেল, চিকিৎসার গাফিলতিতে বাবার মৃত্যুর অভিযোগের বিচার চেয়ে বৎসরাধিক কাল ধরে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে রাজীব সিংহ নামে এক বিচারককে!

Advertisement

বাবার মৃত্যুতে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজীববাবু। বছর ঘুরে গেলেও তার ফয়সালা হয়নি। তিনি জানান, অভিযুক্ত হাসপাতাল আগাম কোনও নোটিস না-দিয়ে শুনানিতে গরহাজির থেকেছে, সব নথিপত্রও জমা দেয়নি। কিন্তু স্বাস্থ্য কমিশন হাসপাতালের এমন আচরণের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত তেমন কড়া মনোভাব দেখায়নি বলেই ওই বিচারকের অভিযোগ।

গত বছরের জুনে রাজীববাবুর বাবা রাজনারায়ণ সিংহের মূত্রনালিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে। কোভিড রোগীতে কলকাতার হাসপাতালগুলি ভর্তি থাকায় তিনি ছোট ছেলে রাজীবের কাছে (তিনি তখন আসানসোল আদালতে কর্মরত ছিলেন, এখন হুগলিতে) যান। রাজনারায়ণবাবুকে ২৯ জুন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ২১ জুলাই তিনি মারা যান। রাজীববাবুর অভিযোগ, হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ তাঁর বাবার কোভিড পরীক্ষাই করায়নি। যথাযথ চিকিৎসা হয়নি। চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি অসম্পূর্ণ ছিল এবং নানা গরমিল ধরা পড়ে। প্রতিকার চেয়ে তাঁরা স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

রাজীববাবু জানান, এই মামলায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের গা-ছাড়া মনোভাব ছিল গোড়া থেকেই। স্বাস্থ্য কমিশনের নির্দেশের পরেও তারা সব নথি জমা দেয়নি। এক দিন শুনানিতে হাসপাতালের তরফে কেউ হাজির না-থাকায় শুনানির দায়িত্বে থাকা কমিশনের কর্তারা ব্যক্তিগত উদ্যোগে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে গরহাজিরার বিষয়টি জানান। রাজীববাবু বলেন, “মামলায় বাদী বা বিবাদী কেউ গরহাজির হলে এ ভাবে যোগাযোগ করা আইনসঙ্গত নয়।”

কমিশন সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, তারা শুনানি দ্রুত শেষ করার চেষ্টাই চালাচ্ছে। কাল, শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে। তবে রাজীববাবুর তরফে সেটি পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।

রাজীববাবু জানান, মায়ের চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভিন্‌ রাজ্যে যেতে হচ্ছে। তাই তিনি শুনানি কয়েক দিন পিছিয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন। কমিশনের তরফে রাজীববাবুর বদলে তাঁর কাকা শঙ্করলাল সিংহকে ফোনে জানানো হয়েছে যে, এ বার শুনানি পিছোবে না। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক।

রাজীববাবুর প্রশ্ন, হাসপাতালের গরহাজিরায় যদি শুনানিতে দেরি করা যায়, তা হলে চিকিৎসার কারণে কেন শুনানি পিছোবে না? তিনি বলেন, “আইন অনুযায়ী আবেদনকারী অত্যন্ত জরুরি কোনও কারণে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারেন। সেটাই লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। আমরা এর আগে এক বারও শুনানি পিছোতে বলিনি। বরং হাসপাতালের জন্যই শুনানি পিছিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন