Abhishek Banerjee

ঠাকুরবাড়ির কোন্দল তৃণমূলের সঙ্গে যেন না-মেশে, মতুয়াভূমে প্রচার হোক দলীয় ‘লাইন’ মেনে, বনগাঁ নেতৃত্বকে অভিষেক-বার্তা

ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক কোন্দল নতুন নয়। আবার সেই কোন্দলে তৃণমূল-বিজেপির উপস্থিতিও স্বাভাবিক। কারণ, বিবাদমান দুই পক্ষের একদিকে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর এবং অন্য দিকে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর এবং তাঁর বিধায়ক কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:২৫
Share:

সোমবার বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিশ্বজিৎ দাস, মধুপর্ণা ঠাকুর এবং মমতাবালা ঠাকুর। —নিজস্ব চিত্র।

লোকসভায় জিতেছে বিজেপি। লোকসভার নিরিখে বিধানসভা ওয়াড়ি ফলাফলেও একটি মাত্র আসনে এগিয়ে তৃণমূল। মতুয়া অধ্যুষিত সেই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে সোমবার বৈঠক করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, সাংগঠনিক বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বার্তা দিয়েছেন যে, মতুয়া ঠাকুরবাড়ির যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে, তার সঙ্গে তৃণমূল দলগত ভাবে সম্পৃক্ত হবে না। মতুয়া সমর্থন পেতে দলের ঠিক করে দেওয়া ‘লাইন’ মেনেই প্রচার করতে হবে নেতৃত্বকে।

Advertisement

ঠাকুরবাড়ির পারিবারিক কোন্দল নতুন নয়। আবার সেই কোন্দলে তৃণমূল-বিজেপির উপস্থিতিও স্বাভাবিক। কারণ, বিবাদমান দুই পক্ষের একদিকে রয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। অন্য দিকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর এবং তাঁর বিধায়ক কন্যা মধুপর্ণা ঠাকুর। অগস্ট মাসে গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয়েছিল ভাই শান্তনুর অনুগামীদের সঙ্গে। সেই পর্বে সুব্রত চলে যান মমতাবালার কাছে। পরামর্শ নিতে। গত মাসে মতুয়াভূমে যখন এ হেন পরিস্থিতি, তখন সে সবের মধ্যে সচেতন ভাবেই নাক গলায়নি বিজেপি। পারিবারিক দ্বন্দ্বকে দলের সঙ্গে মেশায়নি পদ্মশিবির। সোমবার ঘাসফুলের ‘সেনাপতি’ অভিষেকও বার্তা দিলেন, পারিবারিক লড়াইকে কখনওই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, সেই পর্ব থেকেই জল্পনা চলছে এই মর্মে যে, সুব্রত তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। যে প্রসঙ্গে সোমবার মমতাবালাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেবেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ অর্থাৎ, তিনি যেমন সুব্রতের তৃণমূলে যোগদানের প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বলেননি। তেমনই ‘না’-ও বলেননি।

Advertisement

মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয় নিয়ে বিজেপির প্রচারকে ভোঁতা করতে পাল্টা কৌশলের বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। মতুয়াদের কার্ড থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী বলে শ্রমিকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তা প্রচারে আনতে বলা হয়েছে সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে। জনসংযোগকে নিবিড় করতে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচিতেও নেতাদের যুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের দফতরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ‘মসৃণ’ করার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। এ-ও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, কয়েকটি ব্লকে নেতৃত্বের বদল করা হবে।

বনগাঁ লোকসভার মধ্যে সাতটি বিধানসভা পড়লেও তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলায় রয়েছে পাঁচটি বিধানসভা আসন (কল্যাণী এবং হরিণঘাটা নদিয়া জেলার মধ্যে)। তার মধ্যে কেবল স্বরূপনগরেই তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে গত লোকসভা ভোটে। ফলে লড়াই যে কঠিন, তা জানেন তৃণমূল নেতারাও। সম্প্রতি মতুয়াদের উদ্দেশে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একটি মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে মমতাবালার অনুগামীরা চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। যদিও সোমবার অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকে মহুয়ার মন্তব্য নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও আলোচনা হয়নি বলেই দাবি করেছেন মমতাবালা। তবে তৃণমূলের এই রাজ্যসভা সাংসদ স্পষ্টই বলেছেন, মহুয়ার ওই মন্তব্য ‘অস্বস্তি’ তৈরি করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement