Soham Chakraborty

টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে নিষিদ্ধ করা হোক রুদ্রনীলকে, বিস্ফোরক সোহম চক্রবর্তী

‘‘রুদ্রনীলকে তো মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মামনি’ বলে ডাকতে শুনেছি। বিজেপি-তে যেতেই মায়ের নামে খারাপ কথা বলতে শুরু করলেন?’’ প্রশ্ন তুললেন সোহম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১০
Share:

রুদ্রনীল ঘোষ ও সোহম চক্রবর্তী

সম্প্রতি বিজেপি-তে যোগদান করা রুদ্রনীল ঘোষকে নিষিদ্ধ (ব্যান) করুক টলিউড। এমনই বিস্ফোরক দাবি তুললেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। যিনি তৃণমূলের যুবনেতা। ঘটনাচক্রে, ২০১৬ সালে ভোটেও লড়েছিলেন।

Advertisement

দু’জনে একদা একই দলে ছিলেন। দলের নাম তৃণমূল। এখন একই দলে না থাকলেও পেশাগত ভাবে রয়েছেন একই ইন্ডাস্ট্রিতে। পর্দায় এক সঙ্গে দেখাও গিয়েছে দু’জনকে। বন্ধুত্বও অনেক দিনের। তাতে চোনা ফেলল রাজনীতি। ধীরে ধীরে সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করল। অতঃপর বিস্ফোরণ! রুদ্রনীল বিজেপি-তে গিয়ে টলিউডে মাফিয়ারাজের অভিযোগ তুললেন। আর সোহম সরাসরি বললেন, রুদ্রনীলকে এবার ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত!

গত বৃহস্পতিবার বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ে রুদ্রনীল সরাসরি অভিযোগ করেন, ‘‘যত কলাকুশলী দরকার, তার চেয়ে দ্বিগুণ লোক নিতে বলা হচ্ছে। প্রযোজকদের গলায় বন্দুক ঠেকিয়ে এই নিয়ম মানতে বাধ্য করা হচ্ছে। অতিরিক্ত লোকজন বসে বসে টাকা নিচ্ছে।’’ তাঁর দাবি ছিল, টলিউডে ‘মাফিয়ারাজ’ চলছে। কিন্তু তাঁরই ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মী সোহম আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছেন, তিনি রুদ্রনীলের ওই কথা মানছেন না। সোহমের দাবি, ‘‘আমি চাই এই মন্তব্যের জন্য রুদ্রনীলকে এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিষিদ্ধ করা হোক!’’

Advertisement

সোহমের নতুন ছবি ‘মিস কল’। তারই প্রচারের ফাঁকে এল বাংলার রাজনীতির প্রসঙ্গ। আসন্ন নির্বাচনে প্রচার ও ভোটের দায়িত্ব সোহমের কাঁধে। এবং অভিনেতা জানাচ্ছেন, কোথাও কোনও খামতি রাখছেন না। কারণ, যুব তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি সোহমের কাছে অভিনেতা এবং নেতা— দু’টি সত্তাই গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু রুদ্রনীল তো আবার এখন যত অভিনেতা, তার চেয়ে বেশি নেতা। তাঁর প্রসঙ্গে সোহমের বক্তব্য, ‘‘রুদ্রনীল যে ওই কথাটা বললেন, তিনি কি ভুলে গিয়েছেন, যে করোনার সময়ে কত কত মানুষ খেতে পাননি? একটা গোটা ইন্ডাস্ট্রির মুখ চেয়ে বসেছিলেন কত লক্ষ মানুষ! তাঁদের কর্মসংস্থানের জন্যই এই সিদ্ধান্ত। যাতে মানুষ কিছু রোজগার করতে পারে। আমি, রুদ্রনীল— আমরা তো একটা করে ভ্যানিটি ভ্যান পাই। কিন্তু ওই মানুষগুলো? তাঁদের মুখ থেকে সেটুকু অন্নও কেড়ে নিতে চান রুদ্রনীল? এ ভাবে আসলে তাঁদেরই অপমান করা হচ্ছে।’’
নিষিদ্ধকরণ তো বটেই। সোহম চান, টলিউডের কর্মীরা রুদ্রনীলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়ে প্রতিবাদ জানান। সবাই বলুন, রুদ্রনীল যত ক্ষণ সেটে থাকবেন তত ক্ষণ কেউ কাজ করবেন না। বস্তুত, রুদ্রনীলের কাছে সোহমের প্রশ্ন, এত দিন ধরে যদি তাঁর এত সমস্যা হয়ে থাকে, তা হলে আগে কেন বলেননি? বিরোধী শিবিরে গিয়ে এখন তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন কেন? ক্ষুব্ধ গলায় সোহম বলছেন, ‘‘আর মাফিয়ারাজ? সেটা তো বিজেপি করছে! ক্ষমতায় না এসেই সায়নী ঘোষ, দেবলীনা দত্তের মতো অনেক মহিলাকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে!’’

তৃণমূলের অঘোষিত দু’নম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন যুব তৃণমূলের পদাধিকারী সোহম বলছেন, ‘‘রুদ্রনীলকে তো মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মামনি’ বলে ডাকতে শুনেছি আমি। যেই বিজেপি-তে গেলেন, অমনি মায়ের নামে খারাপ কথা বলতে শুরু করলেন? আমি তো স্বপ্নেও ভাবতে পারি না! বসে বসে মাসে ৩ লক্ষ টাকা পেয়ে তা হলে কী করলেন রুদ্রনীল?’’

এখন দেখার, অমিত শাহের দিল্লির বাড়ি এবং ডোমজুড়ের জনসভায় বিজেপি-তে অভিষিক্ত রুদ্রনীল এর জবাবে কিছু বলেন কি না। বললেও, কী বলেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন