Agnimitra Pal Controversy

‘খলিস্তানি’ মন্তব্য বেআইনি ও অসংবেদনশীল, আইনি পদক্ষেপ করবেন, বললেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম

ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডলে ওই মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। শিখদের একটি অংশ কলকাতার বিজেপি দফতর এবং আসানসোলে অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৩৬
Share:

(বাঁ দিক থেকে) সুপ্রতিম সরকার, অগ্নিমিত্রা পাল, যশপ্রীত সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।

পাগড়ি পরিহিত এক শিখ পুলিশ অফিসার সম্পর্কে বিজেপির তরফে যে মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়ে দিলেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। মঙ্গলবার বিকেলে সন্দেশখালি থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে সুপ্রতিম বলেন, ‘বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু আঙুল উঁচিয়ে যশপ্রীত সিংহকে খলিস্তানি বলে মন্তব্য করেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই মন্তব্য অসংবেদনশীল, প্ররোচনামূলক এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করেছে। এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি।’’ পাশাপাশি, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের ক্ষেত্রে কী আইনি বিধান রয়েছে, তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। সুপ্রতিম বলেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫(এ) ধারায় আইনত পদক্ষেপ করা হবে।’’ যদিও সুপ্রতিম কোনও নেতানেত্রীর নাম করেননি।

Advertisement

সদ্যই এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ)-এর দায়িত্ব পেয়েছেন সুপ্রতিম। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘এক জন পাগড়ি পরেন বলে তিনি খলিস্তানি? পুলিশে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান সবাই আছেন। সবাই তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন। এই ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’

পরে রাজ্য পুলিশের তরফে এক্স (সাবেট টুইটার)-এ একটি সেই ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘‘আমাদের এক অফিসারকে খলিস্তানি বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেই ভিডিয়ো শেয়ার করে আমরা ক্ষোভ প্রকাশ করছি। তাঁর দোষ একটাই, তিনি এক জন গর্বিত শিখ এবং একই সঙ্গে এক জন যোগ্য অফিসার, যিনি আইন কার্যকর করার চেষ্টা করছিলেন।’’

Advertisement

ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ওই মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। পাশাপাশি শিখদের একটি অংশ কলকাতায় বিজেপি দফতর এবং আসানসোলে অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছে। গোটা ঘটনায় বিজেপি কিছুটা ‘চাপে’ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকে।

তৃণমূলের একটি অংশ আবার দাবি করেছে, ওই মন্তব্য শুভেন্দু করেছেন। অনেকের আবার পাল্টা যুক্তি, শুভেন্দু যদি তা করে থাকেন, তা হলে অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে কেন? তা হলে তো কাঁথির শান্তিকুঞ্জের সামনে বিক্ষোভ হত। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, যে হেতু শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের লক্ষ্য তিনিই, তাই তাঁর দিকে এই অভিযোগ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর নেতৃত্বে মঙ্গলবার সন্দেশখালি গিয়েছিলেন বিজেপির কয়েক জন বিধায়ক। ধামাখালি এলাকায় ব্যারিকেড গড়ে শুভেন্দুদের আটকে দেয় পুলিশ। সেই সময়ই পুলিশের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয় বিজেপি বিধায়ক এবং কর্মী-সমর্থকদের। অভিযোগ সেই সময়েই ওই জায়গায় কর্তব্যরত পাগড়িধারী আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংহ (এসএস-আইবি)-র উদ্দেশে ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য উড়ে আসে বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে। অভিযোগ উঠেছে, সেই মন্তব্য করেছেন অগ্নিমিত্রা। তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করতেও দেখা যায় যশপ্রীতকে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। পরে অগ্নিমিত্রা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমি ওই পুলিশ অফিসারকে খলিস্তানি বলিনি।’’ আবার বিতর্ক দানা বাঁধতে শুভেন্দুও অগ্নিমিত্রার পাশে দাঁড়াননি। বিরোধী দলনেতা বলেছেন, এ সব বলার কী দরকার!

তবে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি গোটা ঘটনায় কিছুটা হলেও বেকায়দায় বলেই মনে করছেন অনেকে। অনেকের মতে, সন্দেশখালির ঘটনা যখন শাসকদলকে কিছুটা কোণঠাসা করে রেখেছে তখন এই মন্তব্য তৃণমূলের হাতে পাল্টা অস্ত্র তুলে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন