আদিবাসী বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ রায়গঞ্জ

তারপরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে শহরের বুকে। আন্দোলনকারীরা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে প্রায় ৬০টি অস্থায়ী ফলের দোকান ভাঙচুর করেন। একাধিক হোটেলে, একটি প্রতীক্ষালয় ভাঙচুর করা হয়।

Advertisement

গৌর আচার্য

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

ফাইল চিত্র।

পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে কয়েক হাজার আদিবাসী আন্দোলনকারীর দাপটে শুক্রবার দুপুরে উত্তাল হয়ে উঠল রায়গঞ্জ শহর। আন্দোলনকারীদের তুলনায় পুলিশের সংখ্যা ছিল কম। আন্দোলনকারীরা পুলিশের দিকে তির ধনুক তাক করলে, যে ক’জন ছিলেন, তাঁরাও সরে যান।

Advertisement

তারপরে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে শহরের বুকে। আন্দোলনকারীরা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে প্রায় ৬০টি অস্থায়ী ফলের দোকান ভাঙচুর করেন। একাধিক হোটেলে, একটি প্রতীক্ষালয় ভাঙচুর করা হয়। আইএনটিটিইউসির উত্তর দিনাজপুর জেলা কার্যালয়, তার পাশের দু’টি টিনের তৈরি গোডাউন, একটি মোটরবাইক, শতাধিক সাইকেল সহ সেখানে একটি গুদামে পড়ে থাকা বিড়ির মশলায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, একটি পানশালা, একটি হোটেল ও ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়েও ভেঙেচুরে দেওয়া হয়েছে। তারপরে ফেরার পথেও রাস্তার যানবাহন, দোকানপাটে ভাঙচুর হয়। বেলা তিনটে থেকে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন আদিবাসীরা। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।

তারপরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পাল্টা থানায় বিক্ষোভ দেখান। অবরোধও করেন। আজ, শনিবার রায়গঞ্জে ব্যবসা বন্‌ধ ও পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আদিবাসী আন্দোলনকারীদের দাবি, গত রবিবার শহরের বাসস্ট্যান্ডে দুই আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়। দুই মহিলার শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে। সেই ঘটনায় তিন যুবকের নাম করে ও বেশ কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু পুলিশ কেবল তিন যুবককেই গ্রেফতার করেছে। এক সপ্তাহ গড়াতে চললেও বাকিদের ধরা হয়নি। সেই সঙ্গে, শহরের বুকে কেন রমণীদের লাঞ্ছনা করা হবে, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।

এই দিন সকালে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে কয়েক হাজার আদিবাসী উদয়পুরে জড়ো হন। অন্তত ১২টি আদিবাসী সংগঠন এই দিন মিছিলের ডাক দিয়েছিল। বেলা ১টা নাগাদ মিছিল শহরে ঢোকে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

হয়ে যায়। শহর জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত হাই ও প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের ছুটি না দিয়ে স্কুলেই রেখে দেন।

আদিবাসী সমাজশিক্ষণ সাংস্কৃতিক সংস্থার জ্যাঠা মুর্মু বলেন, ‘‘পুলিশ নিষ্ক্রিয়। সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে।’’ পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, তদন্ত ঠিক মতোই চলছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। কিন্তু এ দিন পুলিশ কেন কম ছিল? এক পুলিশ অফিসার জানান, আদিবাসীরা মিছিল করবেন বলেছিলেন। কিন্তু তাঁরা যে আচমকা ভাঙচুর করতে শুরু করবেন, তার আগাম খবর ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন