জমায়েত: আদিবাসী মঞ্চের সংবর্ধনাসভা। বেলপাহাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটে দাগ কেটেছে তারা। সেই সাফল্য পুঁজি করেই ২০১৯-এর লোকসভা ভোটকে পাখির চোখ করছে ঝাড়গ্রামের আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ।
শনিবার বিকেলে বেলপাহাড়ির চাকাডোবা মোড়ে পঞ্চায়েতে জয়ী মঞ্চের প্রার্থীদের সংবর্ধনাসভা ছিল। বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ীদের সংবর্ধনার ওই অনুষ্ঠানেই মঞ্চের নেতারা জানান, আগামী লোকসভা নির্বাচনেও প্রার্থী দেবেন তাঁরা। মঞ্চের সভাপতি বাবলু মুর্মু বলেন, “আগামী বছর লোকসভা ভোটে মঞ্চের তরফে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানো হবে। তার আগে রাজনীতির যাবতীয় ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে আমরা সামাজিক ভাবে পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়ব। সমবন্টন ব্যবস্থায় আদিবাসী ও আদিবাসী নন, এমন সব মানুষের উন্নয়ন করা হবে।”
তৃণমূল অবশ্য মঞ্চকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ। দলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘মঞ্চ কিছুই করতে পারবে না। মানুষজন পস্তাচ্ছেন। জনসমর্থন ফের আমাদের দিকে আসছে।’’ আর বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর বক্তব্য, ‘‘আদিবাসী মঞ্চের নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে আমরা জঙ্গলমহলের সব আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা করেই লোকসভায় প্রার্থী দেব।’’
এ বারের পঞ্চাতের ভোটে বিজেপি-র পাশাপাশি জঙ্গলমহলে ভাল করেছে এই আদিবাসী মঞ্চও। নির্দল হিসেবে লড়ে বাঁশপাহাড়ি ও শিমুলপাল গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তারা। আর ভুলাভেদা পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের ৫টিতে জিতেছেন মঞ্চের প্রার্থীরা। বাকি ৬টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তবে এখানে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ আদিবাসী সংরক্ষিত হওয়ায় ভুলাভেদাতেও মঞ্চেরই বোর্ড দখলের সম্ভাবনা প্রবল।
তবে এখানেই যে আদিবাসী মঞ্চ থেমে যেতে চাইছে না, তা এ দিন চাকাডোবার সংবর্ধনাসভাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েতে জয়ীদের সঙ্গে আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের ‘মাঝি’ (গ্রামের সামাজিক প্রধান)-দেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মঞ্চের নেতাদের সাফ কথা, কোনও সরকারই আদিবাসী-মূলবাসীদের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য ভাবেনি। উন্নয়নের নামে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে ভোটের আসরে তাঁদের লড়াই চলবে।