প্রতীকী ছবি।
সদ্য ঘুরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা। রথযাত্রায় পাশ না হলেও, সভার ভিড় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে সকাল-বিকেল দলীয় কর্মীরা পার্টি অফিসে হাজির হতেন। মঙ্গলবার সকালেও তেমনই ভিড় ছিল। বেলা বাড়তেই ফাঁকা হতে শুরু করল বিজেপি অফিস। টিভির সামনে জনা চারেক মানুষ। দুই-একজনের মুখ বিষণ্ণ। দুই-একজন অবশ্য তখনও আশাবাদী। বলছেন, “একেবারে উড়ে গিয়েছে, বলা যাবে না। হাড্ডাহাড্ডি হচ্ছে।” পাশে নিজের অফিসে বসে রয়েছেন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা। পাঁচ রাজ্যের ফল নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই তিনি বলেন, “ওই রাজ্যগুলোয় গণতন্ত্র রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে নেই। আমরা সে কথাই তুলে ধরব।” রথযাত্রা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। দলীয় সূত্রের খবর, আদালত অনুমতি দিলে বিজেপি রথযাত্রা করবে ঠিকই, কিন্তু সেই অনুষ্ঠান অনেকটাই সংক্ষিপ্ত হবে।
ঘনঘন ফোন বাজছে মালতীর। আজ, বুধবার গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রায় (রথযাত্রা) তৃণমূলের বাধা দেওয়ার অভিযোগে কোচবিহারে শহরে মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপি। সেই মিছিলে যাতে ভিড় হয়, কেউ যাতে হতাশ হয়ে না পড়েন, তা নিয়ে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি। তাঁর পাশে থাকা এক কর্মী বলেন, “সভার দিন তো অনেকেই জানান, কেউ চার হাজার, কেউ পাঁচ হাজার লোক এনেছেন। মিছিলে কত আনেন দেখি।” ভোটের ফলে কি মিছিল নিয়ে দুশ্চিন্তা? বিজেপি নেত্রীর উত্তর, “একদম নয়। এই রাজ্যে সবাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে।” যা শুনে মিটিমিটি হাসেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “এখানে বিজেপি কোনও শক্তিই নয়। যেখানে তারা ছিল সেখানেও হারতে শুরু করেছে।”
বিজেপি হারছে, কংগ্রেস জিতছে। কোচবিহারে অবশ্য সকাল থেকেই কংগ্রেস অফিসে প্রায় জনশূন্য। হাতে-গোনা দুই-একজন বসে রয়েছেন। কোনও উচ্ছ্বাস নেই। একজন জানালেন, আজ, বুধবার কলকাতায় সভা আছে। সবাই ট্রেনে চেপে রওনা হয়েছেন। মোবাইলে কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “আমরা সবাই কলকাতায় যাচ্ছি। তাই পার্টি অফিসে কেউ নেই।” দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহারে কংগ্রেসের অবস্থা খুবই শোচনীয়। একটি ছোট মিছিলেও লোক জড়ো করতে হিমশিম খেতে হয়। তাই আলাদা করে উচ্ছ্বাস নেই। তৃণমূল এবং জেলা সিপিএমের পার্টি অফিসের অবস্থা অন্য দিনের মতোই। টিভির সামনে বসে কয়েক জন।
কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “তৃণমূলের সন্ত্রাসের হাত থেকে মুক্তির জন্য কিছু মানুষ বিজেপিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, এখন তাঁরা বুঝতে পাচ্ছেন বিজেপি আরও খারাপ।”