রাজ্যের হিমঘরগুলিতে পর্যাপ্ত আলু মজুত রয়েছে। অথচ, বাজারে আলুর দাম বাড়ছে। সামনেই পুজোর মরসুম। তার আগে পরিস্থিতিতে লাগাম পড়াতে নড়েচড়ে বসল কৃষি বিপণন দফতর। হিমঘরগুলি থেকে যাতে পর্যাপ্ত আলু বের করে বাজারের চাহিদার সঙ্গে জোগানের ভারসাম্য রক্ষা করা হয় সে ব্যাপারে শুক্রবার রাজ্যের হিমঘর মালিক এবং ব্যবসায়ীদের সতর্ক করলেন কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে ফি-বছর ৬০ লক্ষ টন আলু লাগে। গড়ে আলুর উৎপাদন হয় ৯০ থেকে ৯৫ লক্ষ টন। বাড়তি আলু ব্যবসায়ীরা ভিন্ রাজ্যে পাঠান। কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা মনে করছেন, যে পরিমাণ আলু প্রতিদিন হিমঘর থেকে বের হলে খোলা বাজারের ভারসাম্য রক্ষিত হয়, তা হচ্ছে না। পুজোর মরসুমে বেশি দামের লক্ষ্যে হিমঘরে আলু রেখে দিয়ে বাজারে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করা হচ্ছে।
মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘হিমঘর থেকে পর্যাপ্ত আলু বের করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। এতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সরকার মানুষের স্বার্থে সেই আলু হুকুম-দখল করে ন্যায্য দামে বেচে দেবে।’’ রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন ‘প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি’র কর্তা লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পরে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয়েছে হিমঘর থেকে পর্যাপ্ত আলু বের করতে।
এখন খোলা বাজারে চন্দ্রমুখী আলুর দাম কেজিপ্রতি ২৬ টাকা। জ্যোতি আলু ২২ টাকায় কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যতম আলু উৎপাদক রাজ্য হলেও বাজারে দামবৃদ্ধির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজর এড়ায়নি। তিনি পরিস্থিতি দ্রুত বদলের জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশ দেন। দিন কয়েক আগে কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপনবাবু ধনেখালি, পোলবা, তারকেশ্বরের হিমঘরগুলিতে হানা দেন। শনিবার বর্ধমানের হিমঘরগুলি ঘুরে দেখেন। মন্ত্রীর দাবি, বেশ কিছু হিমঘরে আলুর বস্তা থাকলেও মালিকের সঠিক পরিচয় মেলেনি। একই লোক নানা নামে আলু রেখেছেন। সময়মতো বেশি দাম পেতে বাজারে আলু ছাড়বেন। ওঁরাই বাজারে আলুর কৃত্রিম অভাব তৈরি করছেন। এটা বরদাস্ত করা হবে না।