SIR of Electoral Rolls

এসআইআর প্রসঙ্গে তৃণমূলের মেজাজ বুঝেই পাল্টা তৎপরতা বিজেপিতে, রাজ্য জুড়ে ‘সহায়তা শিবির’ আয়োজনের নির্দেশ

প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে এসআইআর-এর ভিত্তিতে তৈরি তালিকার খসড়া শুক্রবারই প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। তাতে ৬৫ লক্ষেরও বেশি নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বিজেপির দাবি, তালিকা থেকে নিষ্কাশিতরা ‘ভুয়ো ভোটার’ বা ‘অনুপ্রবেশকারী’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৫ ২১:৩৫
Share:

প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে এসআইআর-এর ভিত্তিতে তৈরি তালিকার খসড়া শুক্রবারই প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাজ্য জুড়ে নেতা-কর্মীদের কোমর বাঁধতে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী। নির্বাচন কমিশনের ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (এসআইআর) যাতে ভোটার তালিকা থেকে নামের ‘গণ নিষ্কাশনে’ পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। পাল্টা নির্দেশ জারি হয়ে গেল বিজেপিতেও। রাজ্য জুড়ে অবিলম্বে ‘এসআইআর শিবির’ আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হল জেলা কমিটিগুলিকে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকায় ‘ভুয়ো’ এবং ‘অবৈধ’ ভোটারের রমরমা বলে বিজেপি লাগাতার দাবি করছে। বিহারে যত সংখ্যক নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে, পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাটা তার দ্বিগুণ হবে বলে বিজেপি নেতাদের দাবি। সেই ‘ভুয়ো’ এবং ‘অবৈধ’ ভোটারদের চিহ্নিত করতে এবং সাধারণ জনতাকে নথি জোগাড়ে ‘সাহায্য’ করতে এই সব শিবির আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর।

Advertisement

প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে এসআইআর-এর ভিত্তিতে তৈরি তালিকার খসড়া শুক্রবারই প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। তাতে ৬৫ লক্ষেরও বেশি নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। বিজেপির দাবি, তালিকা থেকে নিষ্কাশিতরা ‘ভুয়ো ভোটার’ বা ‘অনুপ্রবেশকারী’। এ ছাড়া মৃত, স্থানান্তরিত, একাধিক স্থানে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিতদের নামও বাদ পড়েছে। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, সারা দেশেই এই এসআইআর হবে। পশ্চিমবঙ্গে তার তোড়জোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলির কাছ থেকে ‘বুথ স্তরীয় এজেন্ট’দের (বিএলএ) তালিকা চেয়ে নেওয়া হয়েছে। ‘বুথ স্তরীয় আধিকারিক’ (বিএলও), ‘নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক’ (ইআরও), ‘জেলা নির্বাচন আধিকারিক’ (ডিইও) নিয়োগও সারা। এই ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তৃণমূল ও বিজেপির পারস্পরিক বাগ্‌যুদ্ধ। বাড়ছে সাংগনিক তৎপরতাও।

শুক্রবার থেকে বিজেপির রাজ্য দফতরে শুরু হয়েছে জেলার প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠিয়ে লাগাতার তিন দিনের বৈঠক। মূলত জেলা কমিটিগুলির সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করতেই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে এই বৈঠকগুলি করা হচ্ছে। কিন্তু কমিটি গড়ার পাশাপাশি জেলাগুলিকে এসআইআর সংক্রান্ত সাংগঠনিক প্রস্তুতিও অবিলম্বে শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে বিজেপি সূত্রের খবর। প্রথম দিনে ১০টি জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অমিত মালবীয়, শমীক ভট্টাচার্য, অমিতাভ চক্রবর্তীরা। প্রত্যেক বৈঠকেই জেলায় ফিরে ‘এসআইআর শিবির’ আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের তরফ থেকে যাঁদের বিএলএ করা হয়েছে, এই সব শিবিরে তাঁদের প্রশিক্ষণ তো হবেই, একই সঙ্গে সাধারণ জনতাকে ‘সচেতন’ করা এবং প্রয়োজনে তাঁদের ‘সহায়তা’ করার ব্যবস্থাও হবে। পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর শুরু হলে বিএলএদের কোন কোন বিষয়ে সতর্ক নজর রাখতে হবে, তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে শিবিরে। তার পাশাপাশি সাধারণ জনতাকে বোঝানো হবে, এসআইআর কেন ‘প্রকৃত বাঙালিদের অধিকার রক্ষায় জরুরি’।

Advertisement

আগামী ৮ অগস্ট তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের হাজার চারেক নেতাকর্মীকে নিয়ে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে বসছেন। অন্য কয়েকটি বিষয়ের পাশাপাশি সেই বৈঠকে এসআইআর নিয়েও অভিষেকের ‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ থাকবে বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এসআইআর নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কেমন হতে চলেছে। ফলে অভিষেকের বৈঠকে কী ধরনের বার্তা কর্মীদের কাছে বিশদে পৌঁছতে পারে, তা আন্দাজ করা শক্ত নয়। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিও জেলাগুলিকে ‘এসআইআর শিবির’ আয়োজনের নির্দেশ দিতে শুরু করল। একে তৃণমূলের তৎপরতার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবেই অনেকে দেখছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement