Tangra Unnatural Deaths

ঘরে-বাইরে সব সিসিটিভি বন্ধ করে রাখেন দুই ভাই? ফরেন্সিক দল এল ট্যাংরার দে বাড়িতে, কী জানা গেল

ট্যাংরায় প্রণয় দে এবং প্রসূন দে-র চারতলা বাড়ি আগাগোড়া সিসিটিভি দিয়ে মোড়া। ঘরে এবং বাইরে প্রায় ২০টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু সেগুলির ফুটেজ এখনও হাতে পায়নি পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৯
Share:

(বাঁ দিকে) ট্যাংরায় দে পরিবারের দুই ভাই প্রণয় দে এবং প্রসূন দে। তাঁদের চারতলা বাড়ি (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গুচ্ছ গুচ্ছ সিসি ক্যামেরা। কিন্তু সব ‘নিষ্ক্রিয়’? পুলিশের কোনও কাজে লাগছে না সেগুলি। ইচ্ছা করেই কি সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল? শুক্রবার ট্যাংরার অটল শূর রোডের বাড়িতে গিয়েছে ফরেন্সিক মেডিসিন দল। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে পাননি তদন্তকারীরা। মনে করা হচ্ছে, ক্যামেরাগুলি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। বিশেষ পাসওয়ার্ড দিয়ে দে বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এখনও তদন্তকারীরা তা দেখতে পাননি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দে পরিবারের তিন সদস্যের ময়নাতদন্ত করেছিল যে বিশেষজ্ঞ দল, তারাই শুক্রবার ট্যাংরার বাড়িটি পরিদর্শন করেছে। ময়নাতদন্তের সময়ে ওই ফরেন্সিক মেডিসিনের সদস্যদের কিছু খটকা লেগেছিল। সে সব বিষয়ে নিশ্চিত হতে এসেছিলেন তাঁরা।

ট্যাংরায় চারতলা বাড়ি প্রণয় এবং প্রসূনের। বাড়িটি আগাগোড়া সিসিটিভি দিয়ে মোড়া। বাইরে থেকেই ছয় থেকে সাতটি সিসি ক্যামেরা চোখে পড়ে। বাড়ির ভিতরেও আরও কিছু ক্যামেরা রয়েছে। সব মিলিয়ে সিসিটিভির সংখ্যা প্রায় ২০! সোমবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে ওই বাড়িতে ঠিক কী কী ঘটেছিল, তা জানতে এই ক্যামেরাগুলির ফুটেজ কাজে লাগতে পারত। কিন্তু পুলিশ এখনও কোনও ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে পায়নি। একসঙ্গে সব সিসিটিভি খারাপ হয়ে থাকবে, তা হতে পারে না। ফলে কেউ বা কারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই সেগুলি নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিলেন, মনে করছে পুলিশ। তাদের অনুমান, দুই ভাইয়ের মধ্যে কেউ এই কাজ করে থাকবেন। বাড়ির অন্য কেউ ক্যামেরাগুলি বন্ধ করেছেন কি না, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্য কোনও ভাবে ফুটেজ সংগ্রহ করা যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে।

Advertisement

বুধবার ট্যাংরার এই বাড়ির দোতলার দু’টি পৃথক ঘর থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে দুই বধূ রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে-র দেহ। অন্য একটি ঘরে ছিল ১৪ বছরের কিশোরী প্রিয়ম্বদার দেহ। বৃহস্পতিবার তাঁদের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। তা থেকেই স্পষ্ট, তিন জনকে খুন করা হয়েছে। দে বাড়ির উল্টো দিকের একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তাতে দেখা গিয়েছে, রাত ১২টা ৫৮ মিনিট নাগাদ প্রণয় এবং প্রসূন কিশোর প্রতীপকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন। গাড়িতে উঠছেন। পরে ভোর ৩টে নাগাদ বাইপাসের ধাকে অভিষিক্তা মোড়ে তাঁদের গাড়ি ধাক্কা মারে মেট্রোর পিলারে। দুর্ঘটনায় তিন জনই গুরুতর জখম হন। হাসপাতালে আইসিইউতে তাঁদের রাখা হয়েছে। বাড়ি থেকে বেরোনোর পর প্রায় দু’ঘণ্টা গাড়ি নিয়ে কেন ঘোরাঘুরি করলেন তাঁরা, এখনও এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

পুলিশ জানতে পেরেছে, গলা অবধি ঋণে ডুবে ছিলেন দে ভাইয়েরা। ব্যাঙ্ক এবং সংস্থা মিলিয়ে অন্তত ছ’টি জায়গায় কয়েক কোটি টাকা ঋণ ছিল তাঁদের। বাড়িটিও বন্ধক রাখা হয়েছিল। আর্থিক সমস্যার কারণেই তাঁরা সকলে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন, জেরায় জানিয়েছেন দুই ভাই। তাঁদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করছেন তদন্তকারীরা। আশপাশ থেকে আরও কিছু ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। আপাতত তদন্তকারীদের নজর সিসিটিভিতেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement